সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজ নিজ দলের শ্লোগান দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন ছুরিকাহতসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনার জন্য রাজনৈতিক সংগঠন দুটি একে অপরকে দায়ী করে বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করে।
নন্দীগ্রাম থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, কে কার ওপর হামলা করেছে তা পুলিশের জানা নেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে যান। একই সময় বগুড়া-৪ আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনে যান।
সেখানে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে শ্লোগান দেন। তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে বিএনপির নেতাকর্মীরা দ্রুত শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফিরে আসেন। তারা একটি হোটেলে বসে চা-নাস্তা করতে থাকেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পমাল্য অর্পণ করতে আসে।
পরে তারা দলীয় শ্লোগান দিলে হোটেলে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরাও পাল্টা শ্লোগান দেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষে রূপ নেয়। সেখানে ১৫-২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। বুড়ইল ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সোহাগ হোসেনকে (২৬) ছুরিকাঘাত করা হয়। দু’পক্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। খবর পেয়ে নন্দীগ্রাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বগুড়া-৪ আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা উসকানি ছাড়াই তার নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। হামলায় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জহুরুল ইসলাসহ সাতজন আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এ কারণে উপজেলা প্রশাসনের বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করা হয়েছে।
অপরদিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা হোটেল থেকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মুক্তির দাবিতে শ্লোগান দিয়ে তাদের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশের কোনো সহযোগিতা না পেয়ে নেতাকর্মীরা প্রতিহত করতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে তাদের ৩-৪ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে বিজয় দিবসের পরিবেশ নষ্ট করে। এ কারণে আমরা বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করেছি।
নন্দীগ্রাম থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একে অপরের ওপর হামলার দাবি করছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে জানা গেছে, এ ঘটনায় ২-৩ জন আহত হয়েছেন।
আইআর/১৬ ডিসেম্বর