সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: ভোলায় দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় খোরশেদ আলম টিটু হত্যার সাথে সরাসরি অংশগ্রহণকারী মো. শাহিন রাঢ়ী ও মো. নিরব রাঢ়ী নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আটক শাহিন ও নিরব দুজন সহোদর ভাই। এদের বাড়ি সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। আজ বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোলার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে গত সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার বংশাল থানার আওতাধীন বাবুবাজার ব্রিজের নিচে কাঁচাবাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে এদের আটক করে ভোলা জেলা পুলিশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গত ২৬ নভেম্বর যুবলীগ নেতা খোরশেদ আলম টিটুকে গুলি করে হত্যার পর থেকেই সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নেয়া মামলার এজহারভুক্ত আসামি শাহিন ও নিরব ঢাকায় আত্মগোপনে ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি শাহিন ও নিরব তাদেও নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার দিন সংঘঠিত অপরাধের বিস্তারিত তথ্যসহ কিলিং মিশনে অংশ নেয়া অন্যান্যদের বিষয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। তাদের দেয়া তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হবে। এর সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা পেশাদার অপরাধী ও হত্যা, অস্ত্রসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামি। আসামি শাহিন রাঢ়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০টি এবং আসামি নিরব রাঢ়ীর বিরুদ্ধে ১৩টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করলেও আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তারা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলেও জানায় পুলিশ সুপার।
এর আগে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মামলার প্রধান আসামি মো. জামাল উদ্দিন চকেট, এজাহারভুক্ত আসামি মো. আবুল বাশার ও তদন্তে পাওয়া আসামি জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবং হত্যায় ব্যবহৃত দুটি স্পিডবোট জব্দ করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১১ নভেম্বর ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু গত ২৬ নভেম্বর তার ইউনিয়নে একটি সভায় যোগ দিতে কর্মীদের নিয়ে মদনপুরে যান। সেদিন তার প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন চকেটও দুইটি স্পিডবোট নিয়ে মদনপুর যান। পরে সেদিন বিকেলে চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু ট্রলারযোগে ভোলায় ফেরার পথে নাছির মাঝি ঘাটের কাছাকাছি আসলে জামাল তার পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি স্পিডবোট দিয়ে এসে ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় ট্রলারটি স্পিডবোটের ওপর উঠিয়ে দেওয়া হলে বোটটি ডুবে যায়। এতে স্পিডবোটে থাকা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা নদীতে পড়ে যায়। পরে ট্রলারে থাকা লোকাদের ঘাটে নামিয়ে দিয়ে চেয়ারম্যানের ২০-২৫ জন অনুসারী পুনরায় ঘাট থেকে ট্রলার নিয়ে সন্ত্রসীদের ধরতে যান। এসময় সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে যুবলীগ নেতা খোরশেদ আলম টিটুর মাথায় গুলি লাগে। এতে তিনি আহত হলে তাকে ভোলা সদর হাসাপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আইআর/১৫ ডিসেম্বর