সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পারিবারিক কলহের জেরে বাবা ও চাচা মিলে অতিরিক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে ছেলেকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার নওগা ইউনিয়নের মহেষরৌহালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আশরাফুল ইসলাম (২২) ওই গ্রামের আবু তালেবের ছেলে।
নিহতের নানা জয়নাল আবেদিন বলেন, ভাগ্নি জামাই আবু তালেব তিন মাস আগে মনু বেগম নামে নাটোরের এক বিবাহিত নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকেই তাদের সংসারে কলহ বিবাদ শুরু হয়। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার বাড়ির পাশে শাক তুলতে গেলে সতীন মনু বেগম ও আবু তালেবের ভাই জালালের স্ত্রী মিলে তার ভাগ্নি আবু তালেবের প্রথম স্ত্রী আসমা খাতুনকে মারপিট করেন। ছেলে আশরাফুল তাতে বাধা দিতে গেলে বাবা আবু তালেব ও চাচা জালাল উদ্দিন মিলে তাকেও মারপিট করে। এ বিষয়টি নিয়ে পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরো বেড়ে যায়।
এরই জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাবা ও চাচা মিলে জোরপূর্বক আশরাফুলকে অতিরিক্ত গ্যাসের খাওয়ায়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে তাড়াশ উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে আশরাফুল মারা যায়।
তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয় বিয়ে করার পরই মুন বেগম তার স্বামী আবু তালেবকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যায় চাপ দিয়ে আসছিল এবং প্রকাশ্যে বলে বেড়াতো তাদের হত্যা না করলে সে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে। দ্বিতীয় বিয়েই পরই তিন মাস আগেও একদিন রাত ১টার দিকে বাড়ির পাশের ডোবার পানিতে ফেলে প্রথম স্ত্রী আসমাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল আবু তালেব। এ নিয়ে গ্রামে শালিসও হয়েছে। নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছেন তিনি।
নিহতের মা আসমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, সতীন মনু বেগমের কথা মতো আমার স্বামী আবু তালেব ও বাসুর জালাল উদ্দিন মিলে অতিরিক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে ছেলে আশরাফুলকে হত্যা করেছে। মৃত্যুর আগে অসুস্থ আশরাফুলও বিষয়টি আমাদের অবগত করেছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলে আশিক বুধবার দুপুরে বলেন, নিহতের লাশ বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে আনা হবে। নিহতের স্বজনরা মামলা করার জন্য থানায় এসেছে। এর আগে, সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার পরই অভিযুক্তরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।
আইআর/১৫ ডিসেম্বর