সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: দেশে-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এই সুনাম আরও এগিয়ে নিতে হবে। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের মানুষ, শান্তি আর সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জানবে— এটিই আমার প্রত্যাশা।‘
রোববার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপতি প্যারেড-২০২১ এ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা তার দূরদর্শী চিন্তার মাধ্যমে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের উপযোগী উন্নত ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনীর অপরিসীম গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন। এ কারণেই একটি প্রশিক্ষিত, শক্তিশালী ও দক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুমিল্লা সেনানিবাসে ‘বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি’ এর শুভ উদ্বোধন করেন; যা ছিল বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু নবীন সামরিক অফিসারদের পেশাগতভাবে দক্ষ, নৈতিক গুণাবলি সম্পন্ন এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গড়ে উঠার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই প্রাজ্ঞ, কালজয়ী ও দূর দৃষ্টিসম্পন্ন দিক নির্দেশনায় অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদারিত্ব এবং কর্মদক্ষতার সঙ্গে আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে বহির্বিশ্বেও তাদের অবদান রেখে চলেছে।
নতুন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের সন্তান হিসেবে এ দেশের মানুষের পাশে থাকতে হবে। জনগণের সব প্রয়োজনে তোমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার অংশীদার হতে হবে।’
স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার চেতনাকে সব সময় সমুন্নত রাখতে হবে। এই আদর্শ নিয়েই নিজেদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ মেনে চলতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। কিন্তু কখনও আমরা যদি বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হই, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার সক্ষমতাও আমরা ইতিমধ্যে অর্জন করেছি।’
দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব। জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করব।’
সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘নতুন নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করেছি।’
আধুনিক সব সরঞ্জাম সেনাবাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। আওয়ামী লীগের সরকারের হাত ধরেই সেনাবাহিনীতে নারী কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্তের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিকে একটি অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানের একাডেমিতে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।