স্টাফ রিপোর্ট:: সিলেটে শুরু হচ্ছে চারদিনব্যাপীর প্রথমদিন আজ শনিবার (১১ ডিসেম্বর) থেকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন। এবার সিলেট জেলায় ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৫০ জন শিশু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল পাবে।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) নগরের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
এবার সিলেট জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী ৫০ হাজার ৫৪১ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। যার মধ্যে প্রতিবন্ধী ১২৭ জন। ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৪ লাখ ১৫ হাজার ৬০৯ জনকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী শিশু ৫৬০ জন। টিকাকেন্দ্র মোট ২ হাজার ৪২৮টি। এর মধ্যে স্থায়ী ১২টি, অস্থায়ী ২ হাজার ৪১৬টি ও অতিরিক্ত ১২টি কেন্দ্র। টিকাদান কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডলের সভাপতিত্বে ও মেডিকেল অফিসার ডা. স্বপ্নিল সৌরভ রায়ের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা সুজন বণিক, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিনিয়র সাংবাদিক আল-আজাদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মো. রেনুসহ সিলেটের সাংবাদিকবৃন্দ।
সভায় বলা হয়, শনিবার সারাদেশব্যাপী জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু হবে। চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন ‘এ’ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুপুষ্টি। ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে রাতকানা থেকে শুরু করে জেরোপথ্যালমিয়ার মতো রোগ হতে পারে। যাতে করে চোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ লোপ পেতে পারে। এছাড়া ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ও ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল বৃদ্ধি পায়। রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় ও ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়।’
কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন এর গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, ‘ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেলে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা কমে যায়। এছাড়া ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব একটি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা। তাই সম্পূরক খাদ্য হিসেবে বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।’
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, ‘এ প্লাস ক্যাম্পেইন বলতে শুধু টিকা খাওয়ানো নয়। কেন্দ্রে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিভাবকদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেমন- জন্মের পর পরই নবজাতককে শাল দুধ খাওয়ানো, জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো, গর্ভবতি ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ সবুজ শাক-সবজি ও হলুদ ফল খাওয়ানো এবং রান্নায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার করা দরকার। শিশুদের বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত হলুদ ও লাল ফলমূল ও শাবসবজি খাওয়ানো।’
সভায় জানানো হয়, ইতোমধ্যে সিলেট জেলার সব উপজেলার তদারককারী, মাঠকর্মী, ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ বছর কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আসন্ন ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন, প্রস্তুতি ও ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন করার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতের ও ব্যবহৃত সরঞ্জামের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা এবং পর্যাপ্ত মাস্ক সরবরাহ করাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এবিএ/১১ ডিসেম্বর