সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: পুরোনো রেল বগি এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা ছাড়াই পুরাতন বগি দিয়ে ২৩৭ দিন পর চালু হলো বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনের বগির মান এবং যাত্রীসেবা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন বেনাপোলবাসী।
২০১৯ সালের ১৭ জুলাই ভারতগামী অসুস্থ পাসপোর্ট যাত্রীদের কষ্ট লাঘবের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী বেনাপোল এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনের উদ্বোধন করেন। তখন ট্রেনটি ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং ইন্দোনেশিয়ার তৈরি। ট্রেনটিতে ২টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা একটি কেবিন ছাড়াও ৬টি শোভন চেয়ারের বগি ছিল। বর্তমান ট্রেনটি ভারতের তৈরি এবং অনেক দিনের পুরাতন ও নড়বড়ে।
ট্রেনটিতে একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কেবিন থাকলেও সাধারণ যাত্রীদের জন্য শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কোনো কামরা নেই।
করোনাকালে প্রায় ৮ মাস আগে ৫ এপ্রিল বন্ধ হয়ে যায় ট্রেনটি। বেনাপোলসহ ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোকসানের মধ্যে পড়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস। এছাড়া করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সব ট্রেন বন্ধ হলে বেনাপোল-ঢাকাগামী আন্তঃনগর এই ট্রেনটি সরকার বন্ধ করে দেয়।
বেশ কিছু দিন আগে সরকার সব ধরনের যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও অজ্ঞাত কারণে চালু হয়নি ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’। ফলে কষ্ট এবং দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মেডিকেল ভিসা নিয়ে প্রতিদিন ভারত যাতায়াতকারী প্রায় ১ হাজার অসুস্থ পাসপোর্ট যাত্রীর।
এছাড়া সড়ক পথের বেহাল দশা ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরিঘাটে যানজটের কারণে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। বর্তমানে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ভারতে যাচ্ছেন এক হাজারেরও অধিক যাত্রী। দেশে ফিরছেন অনুরূপ সংখ্যক। যাত্রীদের ৯৫ শতাংশ অসুস্থ। ট্রেন না থাকায় এসব যাত্রীদের বাড়িতে ফেরার জন্য অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বেনাপোল থেকে ঢাকায় যেতে পরিবহনে সময় লাগে ১২-১৪ ঘণ্টা। সেখানে ট্রেনে নির্বিঘ্নে সাড়ে সাত ঘণ্টায় বেনাপোল থেকে ঢাকায় পৌঁছা যায়। সপ্তাহে এক দিন বুধবার বিরতি দিয়ে প্রতিদিন দুপুর পৌনে ১টায় বেনাপোল এবং রাত সাড়ে ১০টায় কমলাপুর ছাড়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস।
ট্রেনটি দীর্ঘদিন পর বেনাপোল এসে পৌঁছলে তা একনজর দেখার জন্য স্টেশনের ভিড় লেগে যায়। আগত দর্শনার্থীরা বেনাপোল এক্সপ্রেসে সংযুক্ত বগি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্টেশনমাস্টার মো. সাইদুর রহমানকে ভর্ৎসনা করে তর্কে জড়িয়ে পড়লে তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান।
বেনাপোল রেলওয়ের স্টেশনমাস্টার সাইদুজ্জামান জানান, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি উদ্বোধনের পর ৮৮৬ জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করছিল। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি শুধুমাত্র রেলে যাত্রীবহন বাবদ গত ১ বছরে ১৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী ট্রেনটি একটি লাভজনক পরিবহণ।
এবিএ/ ২ ডিসেম্বর