সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:: নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী কাস্টিং ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ না পেলে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ সদর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় অর্ধশত চেয়ারম্যান প্রার্থী জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪ আওয়ামী লীগ প্রার্থীসহ জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৩২ প্রার্থী । এদিকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ প্রার্থীসহ জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ১৮ প্রার্থীর।
সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীসহ জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে তিন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর। মোট বৈধ কাস্টিং ১২০১৮ ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনির উদ্দিন মনির নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৭৬ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুনুর রশীদ চশমা প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ১১২ ভোট ও ঢোল প্রতীকে মো. আব্দুল মমিন পেয়েছেন মাত্র ১৭ ভোট। লক্ষণশ্রী ইউনিয়নে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের প্রার্থী ফারুক রশীদের। তিনি চাকা প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ১০৪ ভোট। সুরমা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থীসহ জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৪ জন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর।
কাস্টিং ১৬২৬৪ বৈধ ভোটের মধ্যে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আব্দুল সত্তার পেয়েছেন ১৬৯৮ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুল আলম মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৪৬১ ভোট, ঘোড়া প্রতীকে নূর হোসেন পেয়েছেন ৩৫৬ ভোট, ফয়সল আহমদ টেবিলফ্যান প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ১২৩ ভোট। জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীকে ১৮৯ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন।
রঙ্গারচার ইউনিয়নে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছেন ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থীর। মোট কাস্টিং বৈধ ১২৬৫২ ভোটের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রাথী আনারস প্রতীক মহি উদ্দিন পেয়েছেন ৩৬ ভোট, ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল গফুর হাতপাখা প্রতীকে ১৩১ ভোট, মো. নূরউদ্দিন চশমা প্রতীকে ৭৯ ভোট ও আফজাল হোসেন রনি ঘোড়া প্রতীকে ৮৬ ভোট পেয়েছেন। কুরবান নগর ইউনিয়নে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ২ জন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর। এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহীনুর রহমান শাহীন চশমা প্রতীকে ৩৪ ভোট ও কাওসার ঘোড়া প্রতীকে মাত্র ৩০ ভোট পেয়েছেন। কাঠইর ইউনিয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থীসহ জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৫ জন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর। কাস্টিং ৮৮৫৬ বৈধ ভোটের আওয়ামীলীগের প্রার্থী বুরহান উদ্দিন নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১০৩০ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী আজিজুর রহমান তালুকদার মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৮৫৭ ভোট, চশমা প্রতীকে নুরুল হক নোমান পেয়েছেন ৩৩৬ ভোট, জিয়াউর রহমান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ ভোট, শিরতাজ আহমদ টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ৫৩ ভোট।
মোহনপুর ইউনিয়নে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৫ জন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর। কাস্টিং ৯৪৯১ ভোটের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিছুর রহমান ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৪৪ ভোট, চশমা প্রতীকে মোহাম্মদ আলী ৬৬ ভোট, জমিয়তের প্রার্থী ফয়জননূর ফয়েজ খেজুর গাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৪৪৭ ভোট, ফয়জুল হক রজণীগন্ধা প্রতীকে মাত্র ১৫ ভোট ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী হেলাল আহমদ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৩৩ ভোট।
গৌরারং ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থীসহ জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর। কাস্টিং বৈধ ভোটের মধ্যে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ছালমা আক্তার চৌধুরী পেয়েছেন ৯৫০ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান রজনীগন্ধা প্রতীকে মাত্র ২৫৮ ভোট, চশমা প্রতীকে চম্পা বেগম ৭৬ ভোট, ইসলামী আন্দোলনের কামাল হোসেন হাতপাখা প্রতীকে ১৭৯ ভোট, নুরুজ আলী ঘোড়া প্রতীকে ৪০৪ ভোট, আনারস প্রতীকে সামসুল হক ৫৮১ ভোট ও মোটরসাইকেল প্রতীকে সারুয়ার আহমেদ পেয়েছেন ৯০৪ ভোট পেয়েছেন।
এদিকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের এক আওয়ামীলীগ প্রার্থী জামনাত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ১৮ জন ইউপি সদস্য প্রার্থী পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে জমিয়তের প্রার্থী মো. সজিব আহমদের। তিনি খেজুর গাছ প্রতীকে ১২৫ ভোট পেয়েছেন। পূর্ব পাগলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থীর। কাস্টিং ১০৯৬৫ বৈধ ভোটের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন মোটরসাইকেল প্রতীকে ৪৯ ভোট, আক্কাস খান অপু ঘোড়া প্রতীকে ৬১০ ভোট, অটোরিক্সা প্রতীকে আলাল মিয়া ১৭ ভোট, জয়নাল আবেদীন টেলিফোন প্রতীকে ৪২ ভোট পেয়েছেন।
জয়কলশ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থীর। কাস্টিং ১৮৫৩৫ বৈধ ভোটের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী জহির উদ্দিন চশমা প্রতীকে ৬৫২ ভোট, অটোরিক্সা প্রতীকে আব্দুল লতিফ কালাশাহ ১৫৬৬ ভোট,জমিয়তের প্রার্থী ওয়াছির উদ্দিন ৫০৮ ভোট, হাসান মাহমুদ তারেক মোটরসাইকেল ৫০২ ভোট পেয়েছেন।
পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থীসহ জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৩ জন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর। কাস্টিং ৭৮৫৭ বৈধ ভোটের আওয়ামীলীগের প্রার্থী দেবাংশু নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৮৩ ভোট, জমিয়তের প্রার্থী মফিজুর রহমান খেজুর প্রতীকে পেয়েছেন ২৫৫ ভোট ও সামসুল আলম ভূইয়া আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৯৬৫ ভোট। পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ২ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর। কাস্টিং ৮৬৪২ বৈধ ভোটের মধ্যে আনারস প্রতীকে রুবেল মিয়া পেয়েছেন ৯৪৮ ভোট ও চশমা প্রতীকে জমির হোসেন পেয়েছেন ৮৬ ভোট। শিমুলবাঁক ইউনিয়নে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কবির আহমদ। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৮৬ ভোট। পাথারিয়া ইউনিয়নে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ৩ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর। কাস্টিং ১১৭৯২ বৈধ ভোটের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. দেলোয়ার মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১১৪ ভোট, আনারস প্রতীকে বদরুজজামান পেয়েছেন ৫৭ ভোট ও হারুনুর রশীদ অটোরিক্সা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ ভোট।
জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার বলেন, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ি নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের মোট কাস্টিং বৈধ ভোটের আট ভাগের এক ভাগ পেতে হবে। নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোট না পেলে প্রার্থীদের মনোনয়নের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলে জানান তিনি।
এবিএ/৩০ নভেম্বর