শাল্লা প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কান্দিগাঁও গ্রামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে ১১ বছর ধরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকরির অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার হুসাইন আহম্মদ শাহিদীর এমন জালিয়াতির প্রেক্ষিতে একই গ্রামের মো. ইকরামুল হোসেন বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষক মো. হুসাইন আহম্মদ শাহিদী শাল্লা উপজেলার কান্দিগাঁও গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে এবং স্থানীয় শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মৌলভী শিক্ষক। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৭ আগস্ট শাল্লা উপজেলার শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে মৌলভী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মো. হুসাইন আহম্মদ শাহিদী। যোগদানের সময় তিনি নিজেকে এনটিআরসিএ কর্তৃক নিবন্ধিত শিক্ষক হিসেবে দাবি করেন। বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া কাগজপত্রের মধ্যে এনটিআরসিএ সনদও ছিল। ওই সনদ অনুযায়ী, মো. হুসাইন আহম্মদ শাহিদী ২০০৮ সালের এনটিআরসিএ নিবন্ধন পরীক্ষায় ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে অংশগ্রহণ করেন এবং ৪৯.৫০ মার্ক পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইস্যুকৃত ওই সনদের সিরিয়াল নম্বর-৮২৮৬৯৯৭, রেজিস্ট্রেশন নম্বর-৮০০১৭৬৫৩ / ২০০৮ এবং রোল নম্বর-১০৭২৫০১৮। কিন্তু এনটিআরসিএর জাতীয় ওয়েবসাইটে শাহিদীর রোল নম্বর লিখে অনুসন্ধান করলে ১০৭২৫০১৮ রোল নম্বর লিখে সার্চ দিয়ে পাওয়া যায় মো. হাফিজুর রহমান নামের অন্য এক ব্যক্তির তথ্য। অথচ ওই রোল নম্বর সার্চ করলে শাল্লার শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মৌলভী শিক্ষকের কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মৌলভী শিক্ষক মো. হুসাইন আহম্মদ শাহিদী আদৌ জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। তিনি নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগদান করে অন্যায়ভাবে প্রতিমাসে বেতন হিসেবে সরকারি টাকা নির্দ্বিধায় গ্রহণ করছেন, যা সরকারি অর্থ আত্মসাতের শামিল। মো. হুসাইন আহম্মদ শাহিদী ভুয়া সনদে শিক্ষকতায় যোগদান করে বিভিন্ন স্থানে নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে কোটি টাকার জমি কিনেছেন, যা ওই শিক্ষকের প্রকৃত আয় বহির্ভূত অর্থ। এ ছাড়া মৌলভী শিক্ষক শাহিদীর দখলে সরকারি জমিও রয়েছে। এলাকায় তাঁর বাহিনী রয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেছেন একরামুল হোসেন। মঙ্গলবার তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং মো. হুসাইন আহম্মদ শাহিদীর জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন সার্টিফিকেট জালিয়াতির বিষয় এবং বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. হুসাইন আহম্মদ শাহিদীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগ হয়তো ডেস্কে রয়েছে। আমার কাছে এখনো আসেনি। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএ/১৯ নভেম্বর