November 25, 2024, 10:44 am

সংবাদ শিরোনাম :
সেইলরের নতুন পূজা কালেকশন সেজে উঠুন আপনিও রুদ্র নিহতের ঘটনায় সিলেটে মামলা, আসামি ৩ শতাধিক বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের পরিচয় আসাদুজ্জামান ও ওবায়দুল কাদেরর নিষেধাজ্ঞা দিতে আহ্বান মার্কিন কংগ্রেসের ৬ সদস্যের নোবেলজয়ী থেকে সরকার প্রধান কে এই ড. ইউনূসের বড়লেখাবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন সমাজসেবক সাইদুল ইসলাম নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রবাস খাঁদে”পুলিশেরে সাহসী ভূমিকায় বেঁচে গেল ১১ টি প্রান” সিলেটে কমছে বন্যার পানি, বর্ষায় বাড়ছে রোগবালাই আগামীকাল সিলেট ফিরছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান বাজেটে বাড়ছে বিড়ি-সিগারেটের দাম প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীকে সমর্থন নাইডু ও নীতিশের হুয়াওয়ের ‘উইমেন ইন টেক’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা সিলেটে অবৈধভাবে আসা ২ কোটি টাকার ভারতীয় চিনি জব্দ সিলেট মহানগর যুবলীগের ৪ নং ওয়ার্ড কমিটি গঠন”সভাপতি পদে শাকিল নির্বাচিত চোরাচালান লাইনম্যান রুবেল আহমদ বেপরোয়া জমির ধান নষ্ট করে দিলো প্রতিপক্ষ: দিশেহারা কৃষক সিলেটে ইট ভাটা নিয়ে নজিরবিহীন কেঙ্ককারী বিশ্ব গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না : প্রধানমন্ত্রী সুজানগর ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদের কমিটি গঠন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত মাওলানা লুৎফুর রহমানের মৃত্যু ”গুজব সংবাদ ফেসবুকে” বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বিজিবির নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে সচিবদের :প্রধানমন্ত্রীর সিলেটে বিজয় দিবসে গানের অনুষ্ঠানে সংঘর্ষ:নিহত-১ বইমেলা বাঙালি জাতিসত্তা দাঁড় করাতে সহায়ক : কবি নুরুল হুদা বন্ধুকে বিদেশ পাঠানোর সহযোগীতায় বন্ধু খুন দুর্নীতি-অনিয়ম র অভিযোগে ডৌবাড়ী প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্টের ৪ সদস্য বহিষ্কারের অভিযোগ ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী গোয়াইনঘাটের শীর্ষ কুখ্যাত চোরাকারবারী কালা মিয়া
কবি অজয় বৈদ্য অন্তর’র লেখা গল্প “জমিখোর”

কবি অজয় বৈদ্য অন্তর’র লেখা গল্প “জমিখোর”

Please Share This Post in Your Social Media

কবি অজয় বৈদ্য অন্তর:: দেশ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় কালিটেকী গ্রামের উমাচরণ বৈদ্য জমাত উল্লা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষক হিসেব স্কুলের প্রতি যেমন দ্বায়িত্ব ও কর্তব্যরত ছিলেন, তেমন ছিলেন সৎ ও আদর্শীক মননশীলতার একজন খাঁটি মানুষ।
তৎকালীন সময় অল্প বেতন হলে ও আদর্শীক পেশা হিসেবে শিক্ষকতাই বেছে নিয়েছিলেন। তাছাড়া তার পৈত্রিক সম্পত্তি ছিলো প্রচুর যার ধরুন শিক্ষকতাকে পেশা নয় শখ হিসেবে নিয়েছিলেন। গ্রামের পারিপাশ্বিক অবস্থা তৎকালীন সময় খুব একটা ভালো ছিলো না বললেই চলে। সবাই দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতো। কেউ কেউ অন্যের জমি চাষ করতো। কেউ আবার ছোটখাটো ব্যবসা করতো। এভাবেই চলছিলো গ্রামীন জীবন। সেই সময় অর্থ সম্পদে উমাচরণ বাবুর কাকা বাবারা কয়েক গ্রামের উর্ধে ছিলো। এমনকি উমাচরণ বাবুর কাকা বৃটিশ লন্ডনি ও ছিলেন। তাদের বাড়িতে দু একজন চাকর সারা বছরই থাকতো।
গ্রামের সকল লোকেরা তাদের কথা শুনতো। শুধু যে অর্থ সম্পদের বলয়ে শুনতো তা নয়। তারা ছিলেন সহজ সরল এবং অনেক বড় মনের মানুষ যার কারণে সবাই তাদের সাথে পরম আত্মীয়ের মতো চলতো। কারণ তারা জানতো কারো কোনো সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন পড়লে। উমাচরণ বাবুর বাবার কাছে চাইলে কেউ ফিরে আসবে না। এমনকি কোনো পরামর্শ চাইলে ভালো দিকটাই বলে দিবেন ।
একই গ্রামে হরেন্দ্র বৈদ্য নামে এক ডাক্তার বাস করতেন। যদিও ডাক্তার কিন্তু লোকটা খুব জটিল ও কুটিল প্রকৃতির ছিলো। গ্রামের আশে পাশের খাস জমি বন্দোবস্ত এনে বিক্রি করে বিভিন্নভাবে লোক ঠকিয়ে ছেলেমেয়েদের লেখা পড়ার খরচ যোগাতো। যেভাবেই হোক কোন ছেলেমেয়েকেই তিনি অশিক্ষিত রাখেননি। সবগুলো ছেলেমেয়েকেই লেখাপড়া করিয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন হরেন্দ্র বাবু।
একবার বালিকান্দির গ্রামের পাশেই তেকোনা নামক জায়গায় । অনেক পরিমাণ খাস জমি হরেন্দ্র বাবু খুঁজে বের করলো। এসব ধান্ধায় হরেন্দ্র বাবু থাকতো সর্বদা যার ফলে কোথায় কি আছে সে নিমিষেই বের করে ফেলতো।
স্থির করলো বালিকান্দির খাস জমিটা নিজের নামে বন্দোবস্ত আনবে। কিন্তু তার কাছে ওতো টাকা নেই। সে উমাচরণ বাবুর কাছে আসলো টাকা এবং জমির বন্দোবস্তের পরামর্শ নিতে। তখন কালিটেকী গ্রামের একজন ব্যক্তি বছাই নাম তার ।তিনি তখনকার সময়ে ভালো বিচারী ছিলেন। গ্রামের পঞ্চায়েত বিচারে তিনিও থাকতেন সব সময়। উমাচরণ বাবু ও বছায়ের মধ্যে ছিলো অন্তরঙ্গ মিল।
হরেন্দ্র বাবু দুজনকে এক সাথে দেখে মুচকী একটা হাসি দিয়ে। বলতে লাগলেন, আপনাদের দুজনকে এক সঙ্গে পেয়ে বেশ ভালোই হয়েছে।
তখন উমাচরণ বাবু বললেন হরেন্দ্র বাবুকে
কি ব্যাপার বলুন তো শুনি?
মনে হচ্ছে জরুরী তলব।
অয় রে বো, জরুরী কথা আছে তাই আইলাম।
বুঝলাম, তাহলে বিষয় কি শুনি?
হরেন্দ্র বাবু বলতে লাগলেন দেখ, বালিকান্দি অনেক খাস জমির সন্ধান পেয়েছি । ওগুলো নিজের নামে আনতে পারলে অনেক টাকায় দিয়ে বিক্রি করতে পারতাম। অথবা অনেক জমির মালিক হতে পারতাম।
উমাচরণ বাবু বুঝতে বাকি রইলো না যে ডাক্তার নতুন জামেলা পাকাচ্ছে । তিনি বললেন দেখ তুমি সব জমি তোমার নামে করে ফেলো। আমি জমি দিয়ে কি করবো ? আমার জমিজামার দরকার নেই।
এই বলে তিনি ভিতরের বাড়ি চলে গেলেন। তখনও বছাই বাবু ও ডাক্তার বাহিরের ঘরে বসে আছে।
বছাই বাবু বিষয়টা পুরোপুরি জানার জন্য আবার ডাক্তারকে প্রশ্ন করলো।
উমাকে কি করতে হবে শুনি ? তখন ডাক্তার বললো শুধু কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিলেই বালিকান্দির জায়গাটা আমাদের সবার নামে আনতে পারবো।
বছাই বাবু ডাক্তারকে বললেন। আমি বিষয়টা উমার সাথে আলাপ করে কাল জানাবো। এই বলে দুজন দুজনের বাড়ি চলে গেলো।
পরদিন সন্ধ্যায় উমাচরণ বাবুর সাথে বছাই বাবু ডাক্তারের বিষয়টা তুললেন। দেখ আমরা যদি গ্রামের সবার থেকে চাঁদা তুলে দেই তবে গ্রামের সবাই কিছু না কিছু জমি পাবে। এতে গ্রামেরও লাভ হবে । গ্রামের সবার কথা ভেবে উমাচরণ বাবু বছাইয়ের সাথে একমত হলেন।
তখন গ্রামের সবার কাছ থেকে অল্প অল্প টাকা নেওয়া হলো। তবুও অনেক টাকার টান পড়ে গেলো।
এখন কি করা? তখন ডাক্তার হরেন্দ্র বললেন। উমাচরণ আর বছাই যদি বালিকান্দির কলমধরের কাছে যাও তাহলে টাকা পাওয়া যাবে এবং তোমরা বললেই দিয়ে দিবে।
উমাচরণবাবু বালিকান্দির কলমধর আলীকে নিজের বাড়িতে ডেকে আনলেন। তারা ডাক্তারকে ও বছাইকে সামনে রেখে সম্পূর্ণ বিষয় আলাপ করার পর টাকা দিতে রাজি হলো।
তখন কলমধর বললো দেখো উমাচরণ বাবু। আমি শুধু তোমার আর বছাইয়ের মুখ দেখে টাকা দিবো। তবে আমার ছোট্ট একটা আবদার। আমাকে যেনো উত্তর দিকের জায়গা দেয়া হয়।
মাষ্টার উমাচরণ বাবু ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে বললেন শুনছো কি কলমধর আলীর কথা? উত্তর দিক থেকে দিতে রাজি তো ? নাকি আপত্তি আছে?
ডাক্তার হরেন্দ্র হেসে হেসে বললেন: আরে না না টাকা দিচ্ছেন তিনি উত্তর দিকেই পাবেন। উত্তর দিকের জায়গা দিতে রাজি।
মাস কদিন পর বালিকান্দির তেকোনার জায়গা বন্দোবস্ত আনা হয়ে গেছে। এবার যার যার জায়গা টাকার পরিমাপ মতো ভাগ করে দিয়ে বাকি অর্ধেক ডাক্তার হরেন্দ্র পাবেন। তিনি নিজে আগে উত্তর দিক থেকে নিয়ে সবাইকে দেওয়ার পর কলমধর আলীকে দক্ষিণ দিকের জায়গাটুকু দিলেন।
কলমধর আলী পরের দিন সকাল মাষ্টার উমাচরণ বাবুর বাড়িতে এসে হাজির।
উমাচরণ বাবু অবাক হয়ে জানতে চাইলেন কি ব্যাপার কলমধর আলী ভাই সাত সকালে হঠাৎ আজ আমার বাড়িতে। কোনো সমস্যা নেই তো?
কলমধর আলী বললেন: দেখো মাষ্টার বাবু শুধু বিশ্বাস করে, তোমার মুখের দিকে চেয়ে টাকাটা দিয়েছিলাম। এবং তখন বলেছিলাম আমাকে যাতে উত্তর দিকের জায়গাটা দেওয়া হয়। তুমি বেঈমানী করবে ভাবতে পারি নী।
কথাটা শুনার পর মাষ্টার উমাচরণ বাবুর মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো । ডাক্তার হরেন্দ্রর জন্য আমাকে কলমধর বেঈমান বললো !
আজ থেকে আমার এই মুখ বেঈমান হরেন্দ্রকে দেখাবোনা আর। বলেই পরদিন ভোরে মা বাবা ভাই বোন সবাইকে ছেড়ে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যান।
সেই যে নিজের দেশ ছেড়ে গেছেন আর কখনো আসেন নি।
ভারতে যাবার কয়েক বছর পর উমাচরণ বাবুর বাবার মৃত্যুর সংবাদ টেলিফোনে জানানো হলে তিনি প্রতিত্তুরে জানতে চাইলেন তার বাবাকে কালিটেকী না কি অন্য কোথাও মাটি দিবেন। যদি কালিটেকী তে তার বাবাকে মাটি দেওয়া হয় তবে তিনি ভারতে  তার বাবার সৎ কার্যবিধি পালন করবেন তবুও ডাক্তার বেঈমানের মুখ দেখবেন না।

এবিএ/১৪ নভেম্বর





Calendar

November 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  



  1. © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2017 sylhet71news.com
Design BY Sylhet Hosting
sylhet71newsbd