চুনারুঘাট প্রতিনিধি:: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ও আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের ভারত সীমান্তঘেঁষা গ্রাম ও চা বাগানগুলোতে হাত বাড়ালেই মিলছে গাঁজা। এ সমস্ত গাঁজা পাচারে মাদক কারবারিদের বাহক হিসেবে কাছ করছে চা শ্রমিক পরিবারের উঠতি বয়সের কিশোর গ্যাং।
এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ৬৫, ৬৮ ও ৬৯নং পিলার সংলগ্ন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বেলচড়া নামক স্থান দিয়ে বাংলাদেশে গাঁজা প্রবেশ করছে। সীমান্তের ওপারের আদিবাসী ও বাংলাদেশের চা শ্রমিক আদিবাসীদের মধ্যে চেহারার মিল থাকায় তারা সহজেই বিজিবি ও বিএসএফের চোখ ফাঁকি দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া ও খোয়াই নদী পার হয়ে ভারতে চলে যায়। সুযোগ বুঝে তারা ভারত থেকে বস্তা ভর্তি গাঁজা নিয়ে দেশে প্রবেশ করে। সীমান্তের নালুয়া, ডুলনা, আমু, সাউতারল্যান, চন্ডিচড়া ও সাতছড়ি চা বাগানে একটি গাঁজা পাচারের শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এদের মাধ্যমে প্রতিদিন শত শত কেজি গাঁজা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে। তারা চা শ্রমিক পরিবারের কিশোরদের পাচার কাজে ব্যবহার করছে। সীমান্তে খাসপাড়া গ্রামের শতভাগ লোক গাঁজা কারবারি। পুলিশের এক জরিপে জানা যায়, গত ছয় মাসে এ উপজেলায় আড়াই হাজার কেজি গাঁজা বিভিন্ন আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। সম্প্রতি চুনারুঘাট চিমটিবিল সীমান্তের বিজিবি জোয়ানরা চান্দপুর চা বাগানের কিশোর গ্যাং-এর সদস্য নিয়ন উড়াং ও সঞ্চিত ভৌমিককে ২০ কেজি গাঁজাসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এলাকার লোকজন জানান, সম্প্রতি বেশ কিছু কিশোর গাঁজাসহ এলাকার আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। তাদেরকে শিশু আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা মা বাবার জিম্বায় চলে আসে। আবার তারা পূর্বের পেশায় চলে যায়।
ডুলনা চা বাগানের রুমেল উরাং (৩০), কালিয়া মুন্ডা (২৮), সুজন ঝড়া (২৮), বুধন সাওতাল (৪০), আমু চা বাগানের কান্তা তাঁতি (৩৫), সবুজ তাঁতি (৪০), রুপেশ ঝড়া (৪০) তাদের রয়েছে ভারত বাংলাদেশে গাঁজা পাচারের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তারাই ভারত থেকে গাঁজা এনে চা বাগানের বিভিন্ন বাড়িতে রাখে। এদের বিরুদ্ধে মাদক পাচারের একাধিক মামলা রয়েছে। মাদকসহ বার বার পুলিশ, বিজিবির হাতে আটক হলেও তারা পূর্বের পেশা পরির্বতন করছে না। তারাই চা বাগানের কিশোরদের এ কাজে উৎসাহিত করছে। রাত প্রতি ১২ থেকে ১৫ শ টাকার বিনিময়ে কিশোররা গাঁজা পাচার কাজে ব্যবহার হচ্ছে। চুনারুঘাট থানার পরির্দশক (তদন্ত) চম্পক দাম বলেন, ইদানিং পুলিশ ও বিজিবির হাতে চা বাগানের বেশ কিছু কিশোর মাদক পাচারের অভিযোগে আটক হয়েছে। আটকের পর আমরা এদেরকে কিশোর আদালতে পাঠিয়েছি।
বিএ/১১ নভেম্বর