জগন্নাথপুর প্রতিনিধি;: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্রে করে হামলা- সংর্ঘষের ঘটনায় গুলিবদ্ধসহ ছয় জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে দুজনকে সিলেট ওসমানিতে ও অপরজন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে জগন্নাথপুর পৌরসভার ইসহাকপুর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ১৪ জন কে আটক গতকাল মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
আটককৃতরা হলেন, ইসহাকপুর এলাকার মৃত সাবলুছ মিয়ার ছেলে নূর আলম (২৯), মৃত হাজী ফয়জুর রহমান ফারুক আহমদ ফরুখ (৫০), মৃত হাজী আতিক উল্লার ছেলে সুজন মিয়া (৩৫), মৃত জমশেদ আলীর ছেলে আলী নূর (২৩), মৃত সাবলুছ মিয়ার ছেলে শাহ আলম (৩৫), মৃত সালেহ আহমদের ছেলে জাকির আহমদ (২৫), মৃত খালিক উল্লার ছেলে সিজিল উল্লাহ (৩৬), আরব আলীর ছেলে আঙ্গুর মিয়া (২২), মৃত আছদ্দর আলীর ছেলে মো. হেলাল (২৬), নূর মোহাম্মদের ছেলে রুবেল মিয়া (২৩), মৃত ইয়াজ উল্লার ছেলে নজরুল ইসলাম (৫৮), মৃত আলতাব উল্লার ছেলে মনর আলী (৫২), মৃত হাজী তকলিছ উল্লার ছেলে সফু মিয়া (২২), মৃত আকবর আলীর ছেলে আব্দুল আউয়াল (২৭)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ইসহাকপুরের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী উস্তার গণি ও একই এলাকার যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সুরুজ আলী পক্ষের লোকজনের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্রে করে দীর্ঘদিন করে পূর্ববিরোধ চলছিল। যার জের করে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুপক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধসহ ছয়জন আহত হন। এরমধ্যে নোমান আহমদ (২৪) ও আব্দুস সালাম (৪৫)কে সিলেট ওসমানি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ১৪জনকে আটক করেছে। এসময় সংঘর্ষে ব্যবহৃত বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
জগন্নাথপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সত্তার জানান, ইসহাকপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় উন্নয়ন কমিটি নিয়ে উস্তার গণি ও বদরুল ইসলাম পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলচিল। এরমধ্যে জের ধরে রাতে দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হই। এঘটনায় উভয়পক্ষের ১৪জনকে আটক করে গতকাল মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে আমি বাদি হয়ে একটি মামলায় দায়ের করেছি।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
ইসহাকপুরের বদরুল ইসলাম জানান, রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় আমি কিংবা আমাদের পক্ষের কেউ ছড়িত নয়। উস্তার গণির পক্ষের লোক অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রেসন্ত্রে সজ্জিত হয়ে সুরুজ মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ী-ঘর ভাংচুর করে লোকজন মারধর করেছে।
অপরদিকে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী উস্তার গণির পক্ষের সাবেক কাউন্সিলর খলিলুর রহমান জানান, প্রতিপক্ষের লোকজনকে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করে লোকজনকে আহত করেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন আহমদ জানান, রাতের ভাত খাওয়ার সময় ‘গোলাগুলির’ শব্দ শুনতে পেয়েছি। এসময় আমি বাহিরে বের হইনি।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের ডা.এ টি এম শাফায়াত সামস্ রকি জানান, মারামারির ঘটনায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছয়জন রোগি এসেছিলেন। এরমধ্যে দুজনের শরীরে গুলির চিহৃ সন্দেহে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অপর একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি আছেন। অপরাপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গোলাগুলির কোন খবর পায়নি। সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪জনকে আটক করা হয়েছে।
এবিএ/১৫