মৌলভীবাজার প্রতিনিধি;: ২২ লাখ মানুষের জেলা মৌলভীবাজার। কিন্তু জেলার কোনো সরকারি হাসপাতালে নেই নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ। এই গুরুত্বপূর্ণ পদে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাধ্য হয়ে তাদের চিকিৎসা নিতে যেতে হচ্ছে প্রাইভেট হাসপাতল বা ক্লিনিকে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের একটি মাত্র পদ রয়েছে। এ পদে কর্মরত চিকিৎসক ডা. এইচ এম এনামুল হক। পারিবারিক আইনি জটিলতায় এখন তিনি কারাগারে আছেন। ফলে এই পদে জেলার কোনো সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আর কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এ অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা।
সরেজমিনে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় সামাদ নামে এক রোগীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে এসে জানলাম নাক-নাক-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। চিকিৎসক না পেয়ে প্রাইভেট চেম্বারে ৭০০ টাকা ভিজিট দিয়ে চিকিৎসক দেখিয়েছি। প্রাইভেট চেম্বারে অযথা ভোগান্তি হয়। টাকাও বেশি খরচ হয়। আমার বড় কোন সমস্যা নেই। তারপরও প্রাইভেট চেম্বারের চিকিৎসক এক হাজার টাকার টেস্ট দিলেন।’
ফয়সল আহমদ নামে অপর এক রোগী বলেন, ‘গরীব রোগীর জন্য সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকই একমাত্র ভরসা। নাক-নাক-গলা বিশেষজ্ঞ কারাগারে থাকায় বিকল্প কোনো চিকিৎসক নেই। ৫০০-৭০০ টাকা দিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে ডাক্তার দেখানো সম্ভব নয়।’
আলাপকালে পিয়ারা বেগম নামে এক রোগী বলেন, ‘নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. এইচ এম এনামুল হকের হাতে বেশ যশ রয়েছে। তাছাড়া রোগীদের প্রতি তাঁর ব্যবহারও ভালো। তিনি যতদিন কারাগারে আছেন, ততদিন পর্যন্ত নাক-কান-গলা সমস্যায় ভোগা রোগীদের দেখার জন্য বিকল্প ডাক্তার এখানে নেই। এটা আমাদের মতো সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি ছাড়া আর কিছুই না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোরর্শেদ বলেন, পারিবারিক সমস্যায় পড়ে ডা. এইচ এম এনামুল হক আইনি জটিলতায় আছেন। সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার-২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুমায়ুন কবির বলেন, পারিবারিক কারণে আইনি জটিলতায় ডা. এনামুল হক কারাগারে। আপাতত নাক-কান-গলা বিভাগে বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক নেই। যে কারণে চিকিৎসা ব্যাহত হওয়া স্বাভাবিক।
তত্ত্বাবধায়ক আরো বলেন, ‘উনার চাকরি যায়নি বা চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়নি, এই পদে তিনি বহাল আছেন। উনার যে প্রাপ্য বেতন ও সুবিধা সেটা পাচ্ছেন। এখন অন্য কোনো চিকিৎসক আনার সুযোগ নেই। ফলে এ বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অসুবিধা হবে।’
এবিএ/০৪