সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: নতুন ঘোষিত রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া ও সদস্যসচিব নুরুল হকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুনের করা এ আবেদন সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে গ্রহণ করেছে পুলিশ।
সাম্প্রদায়িক হামলার নির্দেশ ও এতে মদদদানের অভিযোগে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ থানায় রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক ছাড়াও যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলার ওই আবেদন করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোমূলক অপরাধের’ অভিযোগ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চকে ‘ভুঁইফোড় ও দুর্বৃত্তদের সংগঠন’ উল্লেখ করে নুরুল হক বলেন, ‘রাজনৈতিক দল গঠনের আগে থেকেই আমরা নানা ধরনের হুমকি-ধমকি পেয়ে আসছিলাম। এমনকি ডাকসুর ভিপি থাকা অবস্থায়ও আমি সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। প্রতিটি মামলাই ছিল ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক।’
তিনি আরও বলেন, ‘(মঙ্গলবার) নতুন দল ঘোষণার পর আমাদের বিব্রত করা ও আমাদের সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য সাম্প্রদায়িক ইস্যু টেনে নানা প্রপাগান্ডা (অপপ্রচার) চালানো হচ্ছে। এরা একটি সুবিধাবাদী গ্রুপ। এদের পেছনে দেশি-বিদেশি কোনো দুষ্টচক্র আছে কি না, আমাদের সন্দেহ হচ্ছে।’
বিজ্ঞাপন
আবেদনে বলা হয়, ১৫ অক্টোবর দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর দিনে গণ অধিকার পরিষদ নামের জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক সংগঠনের স্থানীয় কতিপয় নেতা বিএনপি-জামায়াতের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে এবং নুরুল হক ও রেজা কিবরিয়ার নির্দেশে চট্টগ্রামের জে এম সেন হলসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলা চালান। এ ঘটনার পরপরই যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান ফেসবুক লাইভে এসে ওই ঘটনা অস্বীকার করে দেওয়া এক বক্তব্যের মাধ্যমে দেশে ধর্মীয় বিভেদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বৈধ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।
আবেদনে আরও বলা হয়, গত মঙ্গলবার ঢাকার পল্টনের প্রিতম জামান টাওয়ারে রেজা কিবরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের ঘোষণা দিয়েছেন, যা দেশের প্রচলিত আইন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। এ ছাড়া নুরুল হক চট্টগ্রামের জে এম সেন হল পূজামণ্ডপে হামলাকারীদের নিরপরাধ বলে বক্তব্য দিয়েছেন, যা সাম্প্রদায়িক হামলাকে উসকে দেওয়ার শামিল। সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা রেজা কিবরিয়া, নুরুল হক ও তারেক রহমানদের প্রত্যক্ষ নির্দেশ ও মদদে সম্পন্ন হয়েছে। এসবের মাধ্যমে তাঁরা রাষ্ট্রদ্রোমূলক অপরাধ সংঘটিত করায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা আবশ্যক।
আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদূত হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি একটি রাজনৈতিক বিষয়। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, এটা সাইবার ক্রাইম ডিভিশনে যাবে। তারা যাচাই-বাছাই করে মতামত দেওয়ার পর মামলা নেওয়ার মতো হলে আমরা মামলা নেব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলার আবেদন নিয়ে আমরা মোটেও বিচলিত নই। মামলাটি রাজনৈতিকভাবে দেখার হলে রাজনৈতিকভাবে, আইনগতভাবে দেখার হলে আইনগতভাবে দেখব। চট্টগ্রামের ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত থাকলে প্রশাসন অবশ্যই আইনগত পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু প্রশাসন এই ঘটনাকে যেভাবে রাজনীতিকীকরণ করেছে, বিরোধীদের জড়িয়ে যেভাবে দায় এড়াতে চাইছে, তা খুবই দুঃখজনক। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব ঘটনায় ব্যর্থ হয়েছে।