সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: ‘মানবিক ও প্রগতিশীল’ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর সাবেক সভাপতি নুরুল হক নূরের হাত ধরে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হলো।
‘বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ’ নামে দলটির যে কমিটি হয়েছে, তাতে নূর সদস্য সচিব; গণফোরামের সাবেক নেতা রেজা কিবরিয়া আহ্বায়ক।
প্রাথমিকভাবে গঠিত ৮৩ সদেস্যর আহ্বায়ক এই আহ্বায়ক কমিটির বাকি সবাই নূরের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র, যুব, শ্রমিক অধিকার পরিষদের বর্তমান ও সাবেক নেতা।
মঙ্গলবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দল গঠনের ঘোষণা দিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি নূর বলেন, “আমরা যখন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিচ্ছি তখন পৃথিবী দুইটি বড় সংকট মোকাবিলা করছে।
“আজকে সবার সম্মুখে দাঁড়িয়ে এই প্রত্যয় ঘোষণা করছি যে, আমরা নানান ক্ষেত্রে সৃষ্টি হওয়া বহুস্তরবিশিষ্ট বৈষম্য লাঘব করে বাংলাদেশকে মানবিক উন্নয়নের প্রগতিশীল ধারায় প্রতিষ্ঠা করব ইনশাল্লাহ।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ’ থেকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দাঁড় করানোর পরিকল্পনার কথা জানান আহ্বায়ক রেজা।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই। এটা ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো মানে হয় না।”
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান নবগঠিত দলটির আহ্বায়ক।
পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে প্রতীম-জামান টাওয়ারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
‘জনতা অধিকার, আমাদের অধিকার’ এই শ্লোগান সামনে রেখে গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার, অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ- এই চার মূলনীতির ভিত্তিতে ‘বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ’ পরিচালিত হবে বলে জানানো হয়।
দলটির যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খানের উত্থাপিত ২১ দফা রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি প্রতিরোধ, ক্ষমতার ভারসাম্য, ন্যায় বিচার,সুশাসন, ভোটাধিকার, সংখ্যালঘু জাতি সত্ত্বা ও ধর্মাবলম্বী, দখল, দুষণ প্রতিরোধ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা অন্যতম।
২০১৮ সালে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের’ ব্যানারে সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন সংগঠনটির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক নূর। সেসময় বেশ কয়েকবার তার উপর হামলাও হয়। পরের বছর ডাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন তিনি।
নতুন দল গঠনের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশে ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ছিলেন নূর। বিভিন্ন সময়ে নিপীড়ন-নির্যাতন, হামলার শিকার হন। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চাকুরি করেছেন দীর্ঘদিন।
২০১৮ সালে ওই চাকুরি ছেড়ে বাংলাদেশে ফিরে ড. কামাল হোসেন গণফোরামে যোগ দেন এবং কিছু দিনের মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক হন। কিন্তু দলের ভেতরে দ্বন্দ্বের কারণে ফেব্রুয়ারিতে তিনি পদত্যাগ করেন। তারপর একরম রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়ই ছিলেন তিনি।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর