সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক::কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননা এবং ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, সরকারের পরিকল্পিত চক্রান্ত এবং সরকারই তাতে মদদ দিয়েছে—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর দাবি, সরকারের এজেন্টরাই এ ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানান তিনি। রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, পূজামণ্ডপের ঘটনা সরকারের এজেন্টারাই ঘটিয়েছে। নোয়াখালীর পূজামণ্ডপগুলো ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতকারীরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোক। পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে নিরাপত্তা বিধান না করে হামলা-ভাঙচুর-সংঘাত ও সংঘর্ষকে উসকে দিয়ে, দুই সম্প্রদায়কে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চক্রান্তে মেতে উঠেছে সরকার। পূজামণ্ডপের ঘটনা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার শুধু ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে সাম্প্রদায়িক উসকানিতে মদদ দিচ্ছে। হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। সরকারের এই চেষ্টা যেন সফল না হয়, সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এসব ঘটনায় বিএনপিকে জড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার—এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঘটনার প্রথম দিন থেকেই সরকার বিএনপিকে জড়ানোর জন্য অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু এখন নয়, যখনই দেশে কোনো ঘটনা ঘটে, সেই ঘটনায় বিএনপিকে জড়ানোর চেষ্টা করে তারা। অথচ এই কাজগুলো করে আওয়ামী লীগ। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের নীতি আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
এ ছাড়া কুমিল্লার ঘটনার পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের নামে ছড়িয়ে পড়া অডিও ক্লিপের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সরকার এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। কণ্ঠ কাটপিস করে সুপার এডিটিংয়ের মাধ্যমে বানোয়াট ফোনালাপ ইতিমধ্যে অসংখ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ভাইরাল করা হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের মদদে একটি অসাধু মহল প্রতিনিয়ত এই হীন কাজগুলো সর্বক্ষণ করে যাচ্ছে। আর এ কাজে ক্ষমতাসীনরা অন্তত এক লাখ লোক নিয়োগ দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘পূজামণ্ডপের ঘটনা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার মতো। দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে নষ্ট করার জন্য সরকারের সর্বশেষ প্রচেষ্টা। এই প্রচেষ্টা নস্যাৎ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সরকার এখন নানা জটিল রোগে ভুগছে। তাদের অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেই সমস্যাগুলো চাপা দিতে এ রকম ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। সরকারের অনেক নাটকের মধ্যে এটা আরেকটা নাটক।’
সরকার এ ঘটনা ঘটিয়ে তাদের লোকদের দিয়ে প্রচারও করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সরকার আগামী দিনে আরও নারকীয় ঘটনা ঘটাতে পারে এমন ভবিষ্যদ্বাণী করে জনগণকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর/আজকের পত্রিকা