তাহের আহমদ: প্রথমে জেনে নেয়া যাক কেন আত্মহননের পথ বেছে নেয় মানুষ?
জীবনে চলার পথে প্রায় সকল মানুষ কিছু না কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা মেনে নেয়া এবং সমস্যা সমাধান করা অনেক ক্ষেত্রে কঠিন । ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক,সামাজিক,অর্থনৈতিক সহ বিভিন্ন কারণে জীবনে অনাকাঙ্ক্ষিত বহু দুর্ঘটনা দেখা দিয়ে থাকে।
আর এই দুঃসময় পার করা ব্যক্তি বিশেষ কঠিন হয়ে থাকে ।এই কঠিন সময় পার করতে না পেরে মানুষের মস্তিষ্কে জীবন শেষ করার মতো প্রবণতা দেখা দে। জীবন শেষ করার প্রবণতা থেকে কিছু সংখ্যক মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নে।
মনো বিজ্ঞানীদের মতে আত্মহত্যার সংজ্ঞা হচ্ছে : আত্মহত্যা যার ইংরেজি শব্দ হচ্ছে Suicide! আত্মহত্যা কিংবা আত্মদহন দুইটি একই কথা প্রকাশ করে। আত্মহত্যা মানে ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে নিজেই ধ্বংস করা বা হত্যা করা।
সময়ের শ্রেষ্ট মনিষী ও জ্ঞানী,বিজ্ঞানীদের মতে যখন কোন ব্যক্তির জীবনে ঐ কঠিন সময় দেখা দিবে তা থেকে উত্তলনের জন্য কিছু করনীয়। যা হয়তো আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে রক্ষা পেথে পারেন।
১. সমস্যা ফাইন্ড আউট করা ।
২. ধৈর্যের সাথে সলিউশন খুঁজা ।
৩.একান্ত বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু বা পরিবারের কাউকে সমস্যার বিষয় শেয়ার করা ।
৪.নিজেকে একা না ভেবে শেষ অব্দি মহান সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখা।
*(একটা বিষয় সবসময় খেয়াল রাখতে হবে জীবনে চলার পথে সমস্যার সম্মুখীন হলে নিজের জীবন বিসর্জন কোন অবস্থায় সমাধান নয়। বিন্দু পরিমাণ যাদের মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস আছে,নিজেকে ধার্মিক দাবি করেন তাদের জন্য মহাগ্রন্থ আল কুরআনে সৃষ্টিকর্তার ঘোষণা।
📣 ‘আর (হে মুমিনগণ!) তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।’ (সুরা নিসা : আয়াত ২৯)।
জীবন বিসর্জন বা আত্মহত্যা ইহকাল ও পরকালের জন্য বয়ে আনে সমাধানহীন সমস্যা পবিত্র হাদিসের বর্ণনা মতে।
′‘হজরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পাহাড়ের ওপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে।
আত্মহত্যা বা নিজ ইচ্ছায় নিজের জীবন বিসর্জনকে কুরআন হাদিসে পরিষ্কার বলা হয়েছে কবিরাহ গোনাহ( গোনাহের মধ্যে সবচে বড় গোনাহ )।
আত্মহত্যাকারী কেয়ামতের বিচারে নিজেকে কোনভাবে মুসলমান দাবি করতে পারবেন না।
পরকালে শাস্তির ধরণ হবে এমন :🩸 আত্মহত্যার সময় যে কষ্ট অনুভব হয়েছিল পরকালে টিক ঐ কষ্ট নিয়ে পার করতে হবে অনির্দিষ্টকাল।
আত্মহত্যা বিষয়ে সনাতন-হিন্দু ধর্মেও পরিষ্কার করে বলা হয়েছে নিজ ইচ্ছায় দেহ ত্যাগ সবচেয়ে বড় পাপ।
সনাতনীদের ঈশ উপনিষদ (গীতা মহাত্ম) গন্থে আত্মহত্যার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।
সাবধান করে বলা হয়েছে যে আত্মহত্যাকারী মৃত্যুর পর আনন্দহীন লোকে গমন করবে।
সিলক:অসুর্য্যা নাম তে লোকা অন্ধেন তমসাবৃতাঃতাংস্তে প্রেত্যাভিগচ্ছন্তি যে কে চাত্মহনো জনাঃ।
পৃথিবীর সকল ধর্ম,ধর্মের মনিষী শ্রেষ্ট পন্ডিত,জ্ঞানী,বিজ্ঞানী আত্মহত্যা বিষয়ে একমত আত্মহত্যা কোনভাবে সমাধান হতে পারে না।
পরিশেষে আমার নিজের অভিজ্ঞতা ও বিশ্বাস থেকে বলছি চলার পথে জীবনে বহু সংখ্যক সমস্যায় মানুষকে পড়তে হয় মানুষ হিসাবে নিজেকেও পড়তে হয়েছে আর কঠিন সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে জীবন শেষ করার প্রবণতা মস্তিষ্কে চলে আসে।সময়ের সাথে এই কঠিন মূহুর্ত পার করতে উপরে উদ্ধার হওয়ার যে রাস্তা বলা হয়েছে ঐ কাজগুলো করার ফলে এমন নির্মম পরিস্থিতিগুলো থেকে নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি।পৃথিবীর সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে খুজতে খুজতে হয়তো কোন এক দিন পেয়ে যাবেন আসুন আত্মহত্যাকে না বলি, সমস্যাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই।
লেখন:সম্পাদক ও প্রকাশক সিলেট৭১নিউজ ডটকম