আশ্রয়ণ প্রকল্পের কিছু ঘর নির্মাণের পর পরই ভেঙে যাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু লোক হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ঘর ভেঙে গণমাধ্যমে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঘরভাঙার পেছনে দায়ীদের চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখনই ঘরভাঙার তথ্য পেয়েছি, সম্পূর্ণ সার্ভে করিয়েছি। কারা এর সঙ্গে জড়িত, প্রত্যেকের নাম-ঠিকানাসহ পেয়েছি। তবে কিছু জায়গায় অতিবৃষ্টির কারণে মাটি দেবে ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৯ জায়গায় আমরা দুর্নীতি খুঁজে পেয়েছি। তিনি বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় দেড় লাখের মতো ঘর নির্মাণ করা হলেও মাত্র ৩০০ ঘরে ত্রুটি ধরা পড়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সব থেকে দুর্ভাগ্য হলো— আমি যখন সিদ্ধান্ত নিলাম প্রত্যেকটা মানুষকে আমরা ঘর করে দেব, তখন আমাদের দেশের কিছু মানুষ এত জঘন্য চরিত্রের যে, আমি কয়েকটা জায়গায় হঠাৎ দেখলাম কীভাবে ঘর ভেঙে পড়ছে, কোন জায়গার ভাঙা ছবি ইত্যাদি দেখার পর পুরো সার্ভে করলাম কোথায় কী হচ্ছে। সেখানে আমরা প্রায় দেড় লাখের মতো ঘর তৈরি করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন এলাকায় কিছু মানুষ নিজে থেকে গিয়ে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ঘর ভেঙে তার পর মিডিয়ায় সেগুলোর ছবি তুলে দিয়েছে। তাদের নামধাম এগুলো একদম তদন্ত করে সব বের করা হয়েছে। আমার কাছে যে পুরো রিপোর্টটা আছে, মানে যারা গরিবের জন্য ঘর করে দিচ্ছি, তারা এভাবে যে ভাঙতে পারে, সেই ছবিগুলো দেখলে, দেখা যায়।
ঘর ভেঙে পড়ার পেছনের কারণ মিডিয়া অনুসন্ধান করেনি মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মিডিয়া এগুলো ধারণ করে প্রচার করে, তারা কিন্তু এটা কীভাবে হলো সেটি কিন্তু প্রচার করেনি।
তদন্তে ৯ জায়গায় দুর্নীতি পাওয়া গেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কয়েকটা জায়গায় গেছে, যেমন এক জায়গায় ৬০০ ঘর, সেখানে হয়তো ৩-৪টা ঘর, ওই যে প্রচণ্ড বৃষ্টি হলো যখন, এ জন্যই মাটি ধসে কয়েকটা ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। মাত্র ৯টা জায়গায় আমরা পেয়েছিলাম যেখানে কিছুটা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে, মাত্র ৯টা জায়গায়।
’আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে ঘর নির্মাণে সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেখেছি যে প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। যেসব ইউএনও-ডিসিদের দায়িত্ব দিয়েছিলাম তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। অনেকে নিজেরা এগিয়ে এসেছে এই ঘরগুলো তৈরিতে সহযোগিতা করার জন্য।
তিনি বলেন, যারা ইট তৈরি করে তারাও এগিয়ে এসেছে, অল্প পয়সায় তারা ইট দিয়েছে। এভাবে সবাই, সবার সহযোগিতা, আন্তরিকতাটাই বেশি। কিন্তু এর মধ্যে দুষ্টু বুদ্ধির কিছু, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে কষ্টকর। যখন এটা গরিবের ঘর সেখানে হাত দেয় কীভাবে।
দলের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের আরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাই হোক আমরা সেগুলো মোকাবিলা করেছি। তবে আমাদের নেতাকর্মীদের এ ব্যাপারে আরও সতর্ক থাকা দরকার।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সংগঠন থাকায় করোনা মহামারির ভয়াবহতা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এ সভা সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে চলে সোয়া ১২টা পর্যন্ত। এতে অর্ধশত নেতা উপস্থিত ছিলেন।