বিশ্বনাথ প্রতিনিধি (সিলেট):: বিতর্ক ডেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছেনা বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের বহুল আলোচিত চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে একের পর এক কান্ড করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছেন তিনি। কখনো গানের আসরে নাচানাচি, কখনোবা রাস্তায় বসে মোনাজাত ইত্যাদি নাটতকীয়তার কারণে তার সমালোচকের অভাব নেই।
এবার আবারও আরেক নাটকের জন্ম দিয়েছেন তিনি নিজের ফেসবুক আইডির পোস্টে। মিথ্যাচারে ভরা তার এই ফেসবুক পোস্টে প্রচুর মন্তব্য করা হয়েছে। সেসব মন্তব্যে তাকে মিথ্যাবাদী, নাটুকে এবং আরও নানা গালাগাল দেয়া হয়েছে। বিশ্বনাথের উন্নয়ন কর্তা হিসাবে নিজেকে জাহির করতে গিয়ে নুনু উল্টো ভার্চুয়ালি লাঞ্চিত ও অপমানিত হয়ে এখন ভৎসনায় ভাসছেন। নিজ নির্বাচনী এলাকা বিশ্বনাথ ছাড়া এখন পুরো সিলেটজুড়ে তাকে নিয়ে রসিকতা করছেন স্যোসাল এক্টিভিটসরা।
জানা যায়, সোমবার মধ্যরাতে বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া তার ফেসবুক টাইমলাইনে একটা ঘটনা শেয়ার করেন। তিনি লিখেছেন-
আজ এক অদ্ভুত কান্ড কিনা জানি না বা বুজতে পারছিৃৃ
প্রতিদিনের ন্যায় আজও আমার অফিসে আমি যাচ্ছিলাম প্রতিদিন রাস্তাঘাটে অসংখ্য মানুষের সাথে দেখা হয়। শত শত মানুষকে দেখি আর তাদের দেখে সাহায্যে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
তবে আজ এক অদ্ভুত কান্ড ঘটলোৃ.আজ অফিস থেকে আমার
গাড়ী দিয়ে বাসায় ফিরছিলাম হঠাৎ কয়েক সেকেন্টর মধ্যে অর্থ্যাৎ চোখের পলকে গাড়ী সামনে এক লোক এসে হাজিরৃ. ভয় পেয়ে যাচ্ছিলামৃ.
মনে হচ্ছে রোডের ভিতর থেকে উঠছেৃ.😁এক মানুষের মতো লোক দেখে😁তড়িৎগতিতে আমার ড্রাইবার কে গাড়ী থামাততে বললাম।
রোডের ভিতর থেকে উঠা
উক্ত লোককে জানতে চাইলাম
কি চাস? সে বলে উঠলো উন্নয়ন করো, আরো উন্নয়ন। বিশ্বনাথ উন্নয়ন করছো কেউ করে নাৃতুমি করররা করো করেৃইত্যাদি ইত্যাদি পরে বললাম কি চাও সে বলে উঠলো বাবা কিছুু না খাবার খাব তার এই কথা বার্তা দেখে তাকে খুশি করে দিলামৃ..আর এই ব্যক্তি কাদতে কাদতে দোয়া দিয়ে বললো ভয় নেই আল্লাহ আছেন উন্নয়ন করছো আরো করোৃৃৃ
তার এই পোস্টে নুনু মিয়ার ফেসবুক বন্ধুরা যে বড় মিথ্যাটি তুলে ধরেছেন নিজেদের মন্তব্যে, তা হলো, যে স্থানটির ছবি ও ঘটনা তুলে ধরেছেন তিনি, সেটি বিশ্বনাথ থানা বা উপজেলা নয়। সেটি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার আউশকান্দি রুস্তুমপুর টোল প্লাজা। সেখানে ঐ পাগল লোকটা থাকেন।
আবির দেব ও শাকিল রহমান নামক দু’জন ফেসবুক ব্যবহারকারী বিদ্রুপ করে তাদের মন্তব্যে লিখেছেন, পাগল লোকটা এই এলাকার বাইরে যায়না। তাহলে এই লকডাউনের মধ্যে কিভাবে তিনি বিশ্বনাথ গেলেন এবং নুনু মিয়ার উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখে তাকে এত এত দোয়া করলেন তা তারা বুঝতে পারছেন না। মানে নাটক সাজাতে গিয়ে সূচনাতেই মিথ্যাচারটা ধরা পড়ায় ঘায়েল নুনু মিয়া।
এছাড়া, বিশ্বনাথের উন্নয়ন কর্মকান্ডে নুনু মিয়ার অবদান নিয়েও মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন জনের মন্তব্যে। রুবেল আহমদ নামক একজনতো একেবারে তুলোধুনো করে ছেড়েছেন তাকে। তার মন্তব্যে উঠে আসে নির্বাচনের আগের ও পরের নুনু মিয়ার রূপ।
নির্বাচনের আগে তিনি তাদের সাথে যেমন আচরণ করতেন বা যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর তার থেকে যে তিনি যোজন যোজন দূরত্বে চলে গেছেন তাই বুঝাতে চেয়েছেন রুবেল। তিনি নুনু মিয়ার দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন এইভাবে ‘সত্যি কথা বলতে কি ভাই আগামী নির্বাচনে যদি আপনি আবার নৌকাও নিয়ে আসেন আপনার বরা ডুবি ১০০%, কারণ আপনি নিজে, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের জন্য আপনি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন কিন্তু বিনিময় আপনি কিছুই দেননি দিয়েছেন কষ্ট।’
জহিরুল আলালের মন্তব্য, ‘ভাগ্য ভাল বেটা মিডনাইটের চেয়ারম্যান বলেনি’। শায়িস্তা মিয়া নামক একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা পাকিছির গ্রামের মানুষ একটি রাস্তার জন্য বড় কষ্টে আছি। একটু দেখুন।’
সুমন ইসলামের বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য, ‘নুনু ভাই আগামীর সংসদ সদস্য’। বেলাল হোসেন বুঝতেই পারছেন না, কিভাবে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ এসএম নুনু মিয়াকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হলো। ডিডি জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগ, সিঙ্গেরকাছ ইউনিয়নের মানুষ নুনু মিয়াকে নির্বাচনের পর আর দেখেন নি। তিনি হুমকি দিয়েছেন এই বলে যে, নির্বাচন আবার আসবে, তখন পাগলও আপনাকে ভোট দিবে না।’
অ্যাডভোকেট এমডি হিরা মিয়া দোয়া করেছেন এই বলে, ‘আল্লায় আপনারে বুঝ দেউকা’। মিজানুর রহমান নুনু মিয়ার অফিসের আশপাশের রাস্তাগুলোর দিকে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আরেকজন তাকে চাচা সম্বোধন করে স্ট্যাটাসের সংশোধনী চেয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। জুনেদ জসিম লিখেছেন, ‘চেয়ারম্যান আর পাগল, দুনোটাই এক রকম মানুষ।’ রেজা কিবরিয়া নামে একজন একেবারে ‘মদন’ থেকে ‘বলদ’ বলেও গালাগাল দিয়েছেন সঠিকভাবে বাংলাও লেখতে না পারায়।
এছাড়াও আরও অনেকে অনেক কটু গালাগাল ঝেড়েছেন। করেছে ব্যাঙ-বিদ্রুুপও। আর নুনু মিয়ার উন্নয়নের রূপ দেখাতে একজন একদম ভাঙাচোরা একটা রাস্তার ছবিও দিয়েছেন। তিনি সেটির উন্নয়নের দাবি করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার বক্তব্য জানার জন্য যোগাযোগ করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।