“বর্তমানকালে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে রাজনীতি ও নেতা হওয়া সহজ হয়ে গেছে।”
নেতাদের জন্য জীবন দিতে হলে বা নেতা তৈরি করতে হলে রাজপথের আর দরকার নাই, রাজনীতিবিদ হতে হলে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নাই, বুদ্ধিজীবী হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নাই, শুধু ফেসবুকে এ একটি পোস্ট দিয়েই নেতার আশীর্বাদপুষ্ট হওয়া যায়। রাজনৈতিক পদ-পদবী, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও নেতার আস্থাভাজন হওয়া যায়।জ্ঞানী,বুদ্ধিজীবী ও সংগ্রামী হওয়া যায়।
আজকের যুগের তরুণরা আসলেই ভাগ্যবান ফেসবুকের বদৌলতে।
আশির দশক-নব্বই দশক বা ৭৫ পরবর্তী ২১ বছরের রাজনীতি ও ২০০১-২০০৮(জোট সরকারের শাসনামল ১/১১ সরকার) এই সময়ের ছাত্র-যুব রাজনীতির যে কতটা কষ্টার্জিত ছিল বদর মামা, আমি, সুন্দর, কামরান, জেহিন, আফতাব, সজল দে, মওলুদ, শিপলু, জুয়েল, টনি, নিল, বাদল, মুতলিব, মিলন, আবুল, রুহুল, ফয়ছল এছাড়াও তাজ, সজল, কাওছার, দুলাল, নাজিম, জুড়িতে প্রয়াত ফয়েজ, জাহাঙ্গীর, রিঙ্কু, সাচ্চু, সাহেদ, সহ নাম ভুল পড়া শত শত নেতাকর্মীদের উপর জেল, জুলুম,পুলিশের গুলি, সেনাবাহিনীর নির্যাতন, প্রতিপক্ষের হামলা,মামলা দীর্ঘদিন পলাতক জীবনের এখনকার সময় আর কোন মূল্য নাই। প্রয়োজন নাই। সেই সময়ও সুবিধাবাদিরা আতাত করে সুবিধা ভোগ করেছিলো। বর্তমানে আমরা এক যুগ থেকেই সরকার দল।
ছাত্র রাজনীতি বা যুব রাজনীতি করতে গিয়ে কত পরিবারের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে, লেখাপড়া শেষ হয়েছে, কত মায়ের বুক খালি হয়েছে, সন্তানের চিন্তায় মা-বাবার অসুখ-বিসুখ হয়েছে, অকালে মৃত্যু হয়েছে, তাহার খবর হয়তো আমরা জানি না। যাইহোক আমি বড়লেখা উপজেলার রাজনৈতিক দলের একজন সামান্য কর্মী, আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে আমাদের জুড়ি বড়লেখার অবিসংবাদিত নেতা এই জনপদের হাজার বছরের ইতিহাসের একজন পূর্ণ মন্ত্রী জননেতা আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন এমপির নেতৃত্বে রাজনীতি করি।
“আমি মনে করি এই ধরনের আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন স্থান-কাল-পাত্রভেদে শত বছরে একবারই জন্মায়।”
আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন মহোদয় বিহীন আর কত শত বৎসরের এরকম মাননীয় পূর্ণমন্ত্রী এই জনপদে আসবে তাহা সৃষ্টিকর্তাই জানেন। কারণ সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত বাবু, সাইফুর রহমান, কিবরিয়া সাহেব, মহসিন আলী, বদর উদ্দিন আহমদ কামরানরা আমাদের মাঝে আর নেই। তাহাদের শূন্যস্থান এখনো পূরণ হয়নি এই শাহাব উদ্দিন সাহেব আমি মনে করি শুধু আপনার আমার নয় জুড়ি বড়লেখার দুই লক্ষ আশি হাজার ভোটারের ৫ লক্ষ্য অধিবাসির ভালোবাসার, আস্তার শেষ ঠিকানা। এই শাহাব উদ্দিন সাহেব’কে আমি বা আমরা ব্যক্তিস্বার্থে, হীন চরিতার্থের বা তোষামোদি করে প্রশ্নবিদ্ধ করার কারোর অধিকার নাই। কারণ এই শাহাব উদ্দিন সাহেব এই জনপদের মানুষের ও আমাদের পূর্বপুরুষদের স্বপ্নের, দোয়া’র, ভালোবাসার, আন্দোলন, সংগ্রামের ফসল। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপা ও শেখ হাসিনার ভালোবাসার দান।
এই শাহাব উদ্দিন সাহেব’কে ঘাতকেরা মৃত ভেবে ফেলে গিয়েছিল। ‘শাহাব উদ্দিন’ মৃত্যুঞ্জয়ী এক নাম। আমি বিশ্বাস করি আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন সাহেব এক বহমান প্রমত্ত নদী, যাহার দুই কুল জুড়ে জুড়ী বড়লেখার লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্ন-সাধনা ও আশা-ভরসা যাহার সঙ্গী।
এই বহমান নদীতে দুই তিনটা কাকের ময়লা ঠোঁটের স্পর্শে বহমান নদীর পানি নষ্ট হতে পারে না। কাকের ঠোঁট ই নষ্ট হয়। আবার আমরা যাহারা শুভাকাঙ্ক্ষী, আমাদেরও জনৈক রাজার জুতা আবিষ্কার কাহিনীর মত রাজার পা ধুলি মুক্ত রাখতে সকল রাজ্য ঝাড়ু দিয়ে ধুলোময় করার মানে হয়না। রাজার পায়ে পাদুকা পরিয়ে ধুলো মুক্ত করা যায়।
একজন রাজার তিন কন্যার কাহিনীর মতো মধুর মতন ভালোবাসা, লবনের মত ভালবাসার গল্পে লবণের মত ভালোবাসি বলা রাজকন্যাকে নির্বাসিত করার মানে হয় না।
যাই হোক লেখা দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে পরিশেষে মীরজাফর ও খন্দকার মোশতাক নিয়ে দু-চারটি লেখা লিখে শেষ করছি।
“বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলার পরাজয় ১৭৫৭ সালে।”
মীরজাফর, রায়দুর্লভ এর বিশ্বাসঘাতকতা সকলেরই জানা আছে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা সিরাজের বিশ্বস্ত সহচর মীর মদন, মোহনলাল রা সিরাজের প্রধান সেনাপতি না বানিয়ে মীরজাফরকে প্রধান সেনাপতি বানাতে সিরাজের বেষ্টিত চাটুকার তোষামোদকারীরা জ্ঞান দিয়েছিল। যার ফলে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের পতন হয়েছিল। তেমনি ভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য খন্দকার মোশতাক দায়ী তা সকলেই জানে। কিন্তু আমরা কয়জনে জানি বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বিশ্বস্ত জনাব তাজউদ্দিনকে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত যিনি অর্থমন্ত্রী ছিলেন। ১৫ ই আগস্টের কুশীলবরা বঙ্গবন্ধুকে ভুল বুঝিয়ে তাজউদ্দিনকে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছিল।তাজউদ্দিনকে বঙ্গবন্ধুর বিরাগভাজন করা হয়েছিল। বেলা শেষে পলাশীর যুদ্ধে যুদ্ধরত অবস্তায় মীরমদন আত্মাহুতি দিয়েছিল আর তাজউদ্দীন আহমদ তেসরা নভেম্বর জেলখানায় ঘাতকের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। সকল পর্যায়ের রাজনীতিতে বিশ্বস্ত সহচর জীবন দিয়ে প্রমাণ করে তাহারা নেতাকে ভালবাসে আর চাটুকার, চামচা, সুবিধাবাদীরা মীরজাফর আর খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়ে সুবিধা আদায়ের জন্য। মুজিব আর সিরাজের রক্তে পা দিয়ে।
ইতিহাস যেমনি বলে দেয় কার অবস্থান কোথায় ছিল ভবিষ্যৎ সময়ও বলে দেবে দুঃসময়ে কার ভূমিকা কোথায় থাকবে। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয় আর রাজনীতির দাবার চাল ভুল হলে রাজা রাজ্য হারায় আর প্রজা কষ্ট পায়।
তাই পরিশেষে বলতে চাই মাননীয় মন্ত্রী জনাব শাহাব উদ্দিন সাহেব কে জুড়ি বড়লেখার হাজার হাজার নেতাকর্মী জীবন দিয়ে ভালবাসে। জনাব শাহাব উদ্দিন সাহেব দীর্ঘজীবী হোন। জুড়ী বড়লেখার উন্নয়ন হোক শেখ হাসিনার সরকার দীর্ঘজীবী হোক। ষড়যন্ত্রকারী,কটুক্তিকারী নিপাত যাক।
পরিশেষে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের বাণী বিশ্বাস করে বলি,
قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء وَتُعِزُّ مَن تَشَاء وَتُذِلُّ مَن تَشَاء بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণ : ‘কুললিল্লাহুম্মা মালিকাল মুলকি তুতিল মুলকা মাংতাশাউ ওয়া তাংযিউল মুলকা মিম্মাংতাশাউ ওয়া তুইয্যু মাংতাশাউ ওয়া তুজিল্লু মাংতাশাউ বিইয়াদিকাল খাইরু ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িং ক্বাদির।’
অর্থ : ‘(হে রাসুল!) আপনি বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ২৬)।
ষড়যন্ত্রকারী কুশীলবরা আমাদের মন্ত্রী আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন এমপি মহোদয়ের কিছুই করতে পারবে না। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আল্লাহ সহায়, আমিন।
লেখক ::সোয়েব আহমদ
সাংগঠনিক সম্পাদক:বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ,বড়লেখা উপজেলা শাখা।
চেয়ারম্যান : বড়লেখা উপজেলা পরিষদ ।