Please Share This Post in Your Social Media
ইমামের কাছেই চার বছরের ছেলে মক্তবে পড়ত। সেই সুবাদে ছয় মাস ধরে পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়। এরই মধ্যে স্ত্রীর প্রতি কুনজর ছিল মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানের। এ বিষয়ে ভিকটিম আজহার ও ইমামের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় আজহারও হুমকি-ধামকি দেয়।
বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ইমাম আব্দুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভেতরে নিজের শয়ন কক্ষ থেকে কোরবানির গরু জবাইয়ের ছুরি বের করেন। পরে ইমাম তার হাতে থাকা ছুরি আজহারের গলায় চালিয়ে দেন।
গত (১৯ মে) বুধবার এশার নামাজের পর থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আজহারের মরদেহ সাত টুকরো করেন। রক্তের দাগ পরিষ্কার করেন। এরপর মরদেহ সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। মসজিদ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আজহারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমাম আব্দুর রহমানকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
ইমাম আবদুর রহমানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম। মঙ্গলবার বিকেলে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৯ মে রাতে মসজিদে ইমামের কক্ষে গিয়েছিলেন আজহার। সেখানে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে আজহারকে ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয়।
কী নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল জানতে চাইলে র্যাব-১ এর অধিনায়ক আব্দুল মোত্তাকিম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মাওলানা আব্দুর রহমান সরদারবাড়ি জামে মসজিদে ৩৩ বছর ইমামতি করে আসছেন। আজহারের চার বছরের ছেলে মসজিদের মক্তবে পড়ত। আজহার নিজেও তার কাছে কুরআন শিখছে। এই সুবাদে আজহারের বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করতেন ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান। এ কারণে মসজিদের ইমামের সঙ্গে আজহারের পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
আসামী মাওলানা আব্দুর রহমানের সঙ্গে ১৯ মে আজহারের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে আজহারের গলার ডানপাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে আজহার ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে মাওলানা আব্দুর রহমান ভিকটিমের লাশ সাত টুকরো করে সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন।
জিজ্ঞাসাবাদে ইমাম আব্দুর রহমান বলেছেন, আজহারের অভিযোগ ছিল তার স্ত্রীর দিকে ইমামের কুনজর রয়েছে। কিন্তু আজহারের স্ত্রীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছেন ইমাম। তবে তিনি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি-না ওই বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলমান।
হত্যাকাণ্ডে নিহতের স্ত্রী জড়িত কি-না তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার একদিন আগে ভিকটিমের স্ত্রী আছমা তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে চলে যায়। তিনি ঘটনার আগের দিন থেকে টাঙ্গাইলেই ছিলেন কি-না ও হত্যায় তার সম্পৃক্ততা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Related