বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চৈতননগর গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্কুল ছাত্র সুমেল আহমদ শুকুর (১৭) নিহতের ঘটনায় চৈতননগর গ্রামের মৃত আফতাব মিয়ার ছেলে আলোচিত সাইফুল আলমকে প্রধান অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে গতকাল সোমবার বিশ্বনাথ থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-৪। মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১৫/১৬ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আনোয়ার হোসেন (৩৬) নামের আরও ১জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে জগন্নাথপুর উপজেলার পশ্চিম গড়গড়ি গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের পুত্র। এর আগে ঘটনার দিন রাতেই চৈতননগর গ্রামের মৃত ক্বারী মনোহর আলীর পুত্র আশিক উদ্দিন, মৃত হাজী নিয়াম উল্লাহর পুত্র ইলিয়াস আলী, জয়নাল আবেদীন ও আব্দুন নূর’কে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে, মামলার প্রধান অভিযুক্ত আলোচিত সাইফুল আলমকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। সে যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য তার বাড়ি থেকে দুটি পাসপোর্ট এবং চাউলধনী হাওরে মাটি খনন কাজে ব্যবহৃত এক্সেভেটর মেশিন জব্দ করেছে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মূসা জানান, অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
গত শনিবার বিকেলে উপজেলার ‘চৈতননগর-ইসলামপুর-টুকেরবাজার সড়ক’ ভরাটের জন্য নজির উদ্দিন পক্ষের কৃষি জমি থেকে জোরপূর্বকভাবে সাইফুল আলম পক্ষের লোকজন মাটি কাটতে শুরু করেন। এতে নজির উদ্দিন পক্ষের লোকজন জোরপূর্বক মাটি কাটায় নিষেধ দিলে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হন। সংঘর্ষ চলাকালে আলোচিত সাইফুল আলমের করা গুলিতে নজির উদ্দিনসহ তার পক্ষের ৫ জন গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে নজিরের ভাতিজা ও ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমেল আহমদ শুকুর মৃত্যুবরণ করেন এবং নজির উদ্দিন, তার (নজির) ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী মনির উদ্দিন ও মানিক উদ্দিন (নিহত সুমেলের পিতা), ভাতিজা সালেহ আহমদকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রসঙ্গত, চাউলধনী হাওরের বিরোধসহ নানাবিধ ঘটনা-রটনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে উভর (সাইফুল-নজির) পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে রয়েছে পাল্টাপাল্টি মামলাও। চাউলধনী হাওর নিয়ে হাওরের ইজারাদার সাইফুলের সাথে এলাকাবাসীর চলমান বিরোধ এবং কিছু দিন পূর্বে সাইফুল আলম পক্ষের লোকদের সাথে এলাকার এক পক্ষের সংঘর্ষে ছরকুম আলী দয়াল নামের কৃষকের মৃত্যুর পর শনিবার সাইফুল আলম গুলি করে স্কুল ছাত্র সুমেল আহমদ শুকুরকে হত্যা করে।