এসএনবি ডেস্কঃ চামড়া শিল্পের পর এবার প্লাস্টিক কারখানাও ঢাকার বাইরে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে প্লাস্টিক শিল্প নগরী করবে সরকার।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘বিসিক প্লাস্টিক শিল্প নগরী’ শীর্ষক এই প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগেরর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এই প্রকল্পসহ ২ হাজার ৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্লাস্টিক শিল্প-কারাখানা স্থানান্তর প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছ ১৩৩ কোটি টাকা। বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সভায় মোট সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২ হাজার ১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার জোগান দেওয়া হবে।”
প্লাস্টিক শিল্প কারখানা স্থানান্তর প্রকল্পের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) ধলশ্বেরী নদীর কাছে ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের পাশে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজলোয় ৫০ একর জমিতে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্লাস্টিক শিল্পনগরী গড়ে তুলবে।”
মন্ত্রী জানান, রাজধানীর বিভিন্ন জায়াগায় ও পুরান ঢাকার আশপাশে অপরকিল্পতি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গড়ে ওঠা প্লাস্টিক শিল্প-কারাখানাগুলো এই প্লাস্টিক শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করা হবে। এতে পরিবেশ সম্মত প্লাস্টিকদ্রব্য উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান বাড়বে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়তি হলে শিল্প নগরীতে ৩৭০টি শিল্প প্লট হবে বলেও জানান তিনি।
“এরমধ্যে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তার জন্য সংরক্ষণ করা হবে। ৩৭০টি প্লটে কম-বেশি ৩৬০টি শিল্প ইউনিট স্থাপিত হবে। এসব শিল্প ইউনিটে ১৮ হাজার সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।”
শিল্প মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে প্রায় ৫ হাজার ৩০টি প্লাস্টিক শিল্প-কারখানা রয়েছে, যার অধিকাংশই বেসরকারি মালিকানাধীন। এর মধ্যে ৫০টি বড়, ১ হাজার ৪৮০টি মাঝারি এবং প্রায় ৩ হাজার ৩০টি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কারখানা।
এসব কারখানার মধ্যে ৮০ শতাংশই ঢাকা কেন্দ্রিক এবং ক্ষুদ্র কারখানার ৯০ শতাংশই পুরান ঢাকার বিভিন্নস্থানে অবস্থিত।
হাজারীবাগের সব চামড়া কারখানা স্থানান্তরে সাভারের হেমায়েতপুরের হরিনধারায় নির্মাণ করা হচ্ছে চামড়া শিল্প নগরী। এরই মধ্যে অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, মঙ্গলবারের একনকে সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ‘পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহ প্রকল্প’, যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।
৮৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘ডেলিভারি সেবা দ্রুতকরণ’ প্রকল্প।
সভায় অনুমোদন পাওয়া ‘এসবি সিআইডি ভবনের সপ্তম থেকে ১১তলা র্পযন্ত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
৬১৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও ২৫০ শয্য বিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন’ প্রকল্প।
২৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধতি)’ প্রকল্প এবং ৬২ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব রিসোর্স ফর পভার্টি অ্যালিভিয়েশন থ্রো কমপ্রিহেনসিভ টেকনোলজি’ প্রকল্প।