সিলেট ৭১নিউজ ডেস্ক:: মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা না করে নামের শেষে ‘মাদানী’ উপাধি ব্যবহার করায় আলোচিত শিশু বক্তা রফিকুল ইসলামকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মদিনা শাখার আমির ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে রফিকুল ইসলাম মাদানীর পক্ষে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরীফুল হাসান খাঁন।
তবে নিজের নামের শেষে ‘মাদানী’ উপাধি ব্যবহার বন্ধ করবেন না আলোচিত শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম। তিনি নিজের নামের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ‘শিশুবক্তা’ উপাধিটি মুছে ফেলতে এই পথ অবলম্বন করেছিলেন বলে দাবি করেছেন।
সম্প্রতি এক মাহফিলে বক্তব্য দেয়ার সময় রফিকুল ইসলাম ‘মাদানী’ ব্যবহারের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, আলেমরা তাদের নামের শেষে এমন শব্দ জুড়ে দেন যা দিয়ে তাদের নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়। এটি একটি রসম। কেউ নামের শেষে তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন তা জুড়ে দেন। যেমন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে এলে মাদানী, মিসরের আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষালাভ করলে আজহারী, দেওবন্দ থেকে এলে কাসেমি বা দেওবন্দী উপাধি ব্যবহার করেন আলেমরা। কেউ কেউ আবার তার জন্মস্থানের নাম ব্যবহার করেন। দেশে অনেকে নিজ মাদ্রাসার নাম ব্যবহার করেন। যেমন মোহাম্মদপুরের রহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা লাভকারীরা রহমানী, জামিয়া মাহমুদিয়া মাদ্রাসার ছাত্ররা মাহমুদী ব্যবহার করে।
রফিকুল ইসলাম যেহেতু জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শিক্ষার্থী সেহেতু তিনি মাদানী লিখতে পারেন এমন মন্তব্য করে বলেন, আমার এই মাদানী উপাধি ব্যবহারে আমার বারিধারা মাদ্রাসার শিক্ষকরা কখনো বিরোধিতা করেননি। তাদের পরামর্শ নিয়েই আমি এই উপাধি ব্যবহার করেছি। আমি শিশুবক্তা হিসেবে আর পরিচিতি পেতে চাই না। যখন শিশু থাকব না তখনো কি এই উপাধি নিয়েই থাকতে হবে আমাকে? যারা আমাকে শিশুবক্তা বলেন এক সময় তাদের মাহফিলে যাওয়া বন্ধ করে দেই। এরপরও যখন নাম থেকে শিশুবক্তা উপাধি মুছে ফেলতে ব্যর্থ হচ্ছিলাম তখন শিক্ষকদের পরামর্শে মাদানী উপাধি গ্রহণ করি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, নামের মিলের কারণে সমস্যায় পড়ায় হেফাজতের ওই নেতা বিষয়টি হেফাজতের মহাসচিবকে বলতে পারতেন। মামুনুল হকের মতো নেতাদের বলতে পারতেন। আমার শিক্ষকদের কাছে নালিশ করতে পারতেন বা আমাকে সরাসরি বা মেসেজে জানাতে পারতেন। কিন্তু তা না করে আমার বাড়িতে সরাসরি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। এতে আমার সহজ সরল মা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এলাকার লোকজন আমাকে ‘জাল মাদানী’ বলে কটাক্ষ করছে। দেশের জাতীয় দৈনিকে আমাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। এতে আমার সম্মানহানি ঘটছে। অথচ এই মাদানী উপাধি ব্যবহারে আমি ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয় বা উপমহাদেশের কোনো নিয়ম ভঙ্গ করিনি। আমি ভাইরাল হতেও এই উপাধি ব্যবহার করিনি।
এর আগে হেফাজত নেতা রফিকুল ইসলাম মাদানীর দেয়া উকিল নোটিশে বলা হয়, আপনি নোটিশ গ্রহীতা মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা না করে অথবা মদিনা মনোয়ারায় বসবাস না করা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন যাবৎ বেআইনিভাবে নিজের নামের সঙ্গে ‘মাদানী’ পদবী ব্যবহার করে আসছেন।
নোটিশে আরও বলা হয়, আমার মক্কেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী তার নামের সঙ্গে প্রায় ২৫ বছরের বেশি ‘মাদানী’ পদবী ব্যবহার করে দেশে ও বিদেশে সর্বমহলে পরিচিতি লাভ করেছেন। আপনাকে আমার মক্কেল একাধিকবার মৌখিকভাবে এ অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা সত্ত্বেও আপনি অনুরোধ রক্ষা না করে আপনার অনৈতিক ও বেআইনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ‘মাদানী’ পদবী ব্যবহার করা থেকে বিরত না থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
সিলেট৭১নিউজ /টিআর