Please Share This Post in Your Social Media
বাদ জোহর নারিন্দায় পীর সাহেববাড়ি জামে মসজিদে এ টি এম শামসুজ্জামানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আসর সূত্রাপুর বাজার জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে জুরাইন কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান আজ শনিবার সকাল আটটায় রাজধানীর সূত্রাপুরে নিজ বাসায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান, সংক্ষেপে এ টি এম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার ভোলাকোটের বড়বাড়ি। ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে। পড়াশোনা করেছিলেন ঢাকার পোগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহীর লোকনাথ হাইস্কুলে। ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাইস্কুল থেকে। তারপর জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। তাঁর বাবা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল, যিনি শের-এ–বাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। শামসুজ্জামানের মা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।
অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি থাকলেও এ টি এম শামসুজ্জামান একাধারে পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার। অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননাসহ তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ছয়বার। ১৯৮৭ সালের ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা শাখায়, ১৯৯৯ সালের ‘ম্যাডাম ফুলি’, ২০০১ সালের ‘চুড়িওয়ালা’ ও ২০০৯ সালে ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা শাখায় এবং ২০১২ সালে ‘চোরাবালি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে পুরস্কৃত হন। এ ছাড়া ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সময় তিনি আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন।
চলচ্চিত্রজীবনের শুরুতে ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। প্রথমবার কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ ছবির জন্য। এ ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন তিনি। প্রথম দিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রজীবন শুরু করেন তিনি। অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন ১৯৬৫ সালে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি আলোচনায় আসেন। বহু সিনেমার পাশাপাশি বেশ কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। সেসবের মধ্যে রয়েছে ‘রঙের মানুষ’, ‘ভবের হাট’, ‘ঘর কুটুম’, ‘বউ চুরি’, ‘নোয়াশাল’, ‘শতবর্ষে দাদাজান’ ইত্যাদি।
Related