মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশন (বাসকের) কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান সাগরিকা ইসলাম বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে নাগরিক হিসেবে বেঁছে থাকার সমান অধিকার সকলেরই রয়েছে। নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন করা বেআইনি, মানবাধিকার ও সংবিধানের পরিপন্থি। নির্যাতিত মানুষের জান মালের নিরাপত্বা প্রদান সরকার ও রাষ্ট্রের উপর দায়িত্ব বর্তায়। বাসক সব সময় নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। কারো সাথে মত বিরুধ থাকলেও তাকে বাড়ি ঘর থেকে উচ্ছেদ করা ও মামলা মোকদ্দমা দিয়ে নি:শেষ করা কোন মতেই কাম্য নয়। প্রভাবশালি কতৃক নিরিহ লোকদের অত্যাচার করা হলে প্রকৃতিগতভাবেই বিচার হয়ে থাকে। আমরা গরিব লোকদের উপর অত্যাচার নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্গনের মত ঘটনা মেনে নিতে পারিনা। সবসময় আমরা নির্যাতিতদের সরকারের পাশাপাশি আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে। বিশ্বনাথে একটি পরিবারকে নির্যাতন, হয়রানি ও বাড়ি ঘর থেকে উচ্ছেদের ঘটনার অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে তদন্তের জন্য এখানে এসেছি।
শুক্রবার (১২ ফেব্রæয়ারী) সকাল ১১টায় উপজেলার অলংকারি ইউনিয়নের পিটাকরা গ্রামের মাওলানা ইলিয়াস হুমাইদি ও তার পরিবারকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ ও বিভিন্নভাবে মানবাধিকার লঙ্গনের বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তে এসে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
সিলেট শহর থেকে চেয়ারম্যান সাগরিকা ইসলাম ও তার প্রতিনিধি দল প্রথমে বিশ্বনাথ থানায় প্রবেশ করেন। সেখান থেকে এসআই সঞ্জয় লাল দেরসহ একদল পুলিশ তাকে নিয়ে পিটাকরা গ্রামে যান। তাদের সাথে ছিলেন, অভিযোগকারি মাওলানা ইলিয়াস আল-হুমাইদী।
সাগরিকা ইসলাম ও তার প্রতিনিধি দল শাহ সিকান্দরের মাজার ও দখলকৃত ভুমি ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
উপস্থিত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং পুলিশ ও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ইলিয়াস হুমাইদী তার লিখিত বক্তব্য প্রতিনিধি দলকে পাঠ করে শোনান এবং অভিযোগ করে বলেন, গত ২৬শে মার্চ থেকে এ পর্যন্ত তিনি ও তার ভাই আলকাছ আলী প্রতিপক্ষের প্রাণনাশের হুমকিতে বাড়িঘরে আসতে পারছেন না। আজ তিনি পুলিশি প্রহরায় ও মানবাধিকার চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বাড়িতে এসে তাঁর বৃদ্ধ মাকে দেখতে পারলেন। এসময় তার পরিবারের সকল সদস্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এখানে এক হৃদয় বিদারক ঘটনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগে আরো বলা হয়, প্রতিপক্ষের আখতার হোসেন ইলিয়াস হুমাইদীর পূর্ব পুরুষের জায়গা জমি দখলের প্রচেষ্টা করছেন এবং তাদের হত্যা করারও পরিকল্পনা করছেন। ১০/১২জন যুক্তরাজ্য প্রবাসি লোক থাকায় তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হয়রানি করছেন। বিশ্বনাথ থানা পুলিশ তার ডিজি পর্যন্ত গ্রহণ করেনি। পরে জিডি করা হলেও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বাড়িতে মহিলাদেরকে নানাভাবে উত্যক্ত ও হয়রানি করা হচ্ছে। এই চক্রের লোকজন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ফেসবুকে কটুক্তি করায় আমি আপত্তি করি। এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে আমাকে খুন করার পরিকল্পনা করছে। আমি থানায় জিডি করলেও কটুক্তিকারিদেও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা।
বাসকের চেয়ারম্যান সাগরিকা ইসলামের সাথে ছিলেন, কেন্দ্রীয় পরিচালক (তদন্ত) কামরুল ইসলাম, পরিচালক (অর্থ) মনি মোহন বিশ্বাস, বিভাগীয় প্রধান ফারুক আহমেদ নোমান, সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া মজুমদার, সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা কাজী খাদিজা সিদ্দিকা রুনা। তদন্তকালে পিটাকরা ও আশপাশ গ্রামের অনেক লোকসহ বিশ্বনাথের স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।