৩ নভেম্বরের পর থেকে একটি শপথকে ঘিরে বিশ্ববাসীর চোখ আমেরিকায়। এ নিয়ে উত্তেজনা ও রোমাঞ্চের শেষটুকু দেখেছে বিশ্ব। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সমর্থকদের নগ্ন উল্লাসে ভেঙ্গেছে দীর্ঘ গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য। তবুও থেমে যায়নি আমেরিকা। অবশেষে হয়েছে সেই ঐতিহাসিক শপথ। ১২৭ বছরের পারিবারিক পুরনো বাইবেল ছুঁয়ে আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে পথচলা শুরু করলেন জো বাইডেন। আর এর মাধ্যমে কার্যত শেষ হলো এক রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার।
বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা বেজে ২৮ মিনিট (আমেরিকা সময় সকাল ১০.২৮)। ঐতিহ্যের ধারাবিহকতা বজায় রেখে স্মরণকালে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাঝে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটাল হিলের করিডোরে অবস্থান নেন জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিস। বাইডেনের পরনে ছিলো কালো স্যূট, এর উপরে ওভার কোট। সাথে ফিরোজা কালারের গাউন পরিহিত ফার্স্ট লেডী জিল বাইডেন। অন্যদিকে নীল গাউন পরে স্বামী ডাউগ এনহফকে সাথে নিয়ে একটু পেছনে দাড়ান আমেরিকার প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। ক্যাপিটালে প্রবেশের সিঁড়িতে দাড়াঁনোর সাথে সাথে বেজে উঠলো প্রথাগত বাদ্য, আর সু-সজ্জিত নিরাপত্তা বাহিনীর প্রেসিডেন্সী স্যালুট।
আমেরিকার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে নতুন প্রেসিডেন্টের শপথে পুরনোরা থাকেন। এবারও তা হয়েছে। বাইডেনের আসার আগেই ক্যাপটালে সস্ত্রীক পৌঁছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, বিল ক্লিনটন ও জর্জ ডব্লিউ বুশ। তাদের প্রবেশের সময়ও অভ্যর্থনার শেষটুকু অবশিষ্ট রাখেনি আমেরিকা। তাদেরও জানানো হয় প্রেসিডেন্সি স্যালুট।
ঠিক ১০টা ৩০ মিনিটে ব্যান্ড দলের বাদ্যের তালে শুরু হয় অভিষেক অনুষ্ঠান। এর ফাঁকে সাবেক তিন প্রেসিডেন্ট ও তাদের স্ত্রীদের সাথে হাস্যোজ্জল করমর্দন করেন বাইডেন। এসময় তাদের হাসিই যেন বলে দিয়েছে নিশ্চয়ই তারা হৃদয়জ শুভ কামনা জানিয়েছেন উত্তরসুরীকে।
এর মাঝেই শুরু হয় শপথ অনুষ্ঠান। আমেরিকার প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের কাছে বাইবেল ছুঁয়ে শপথ নেন ৭৮ বছর বয়সী দ্বিতীয় ক্যাথলিক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিচারপতি থারগুড মারশালের কাছে শপথ নেন কমলা হ্যারিস। শপথের পরই ঐতিহাসিক ২৭টি অধ্যাদেশে সই করে শুভ সূচনা করেন বাইডেন।
বাইডেন-কমলার শপথের দিন ভোরে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করে ফ্লোরিডা চলে যান আনপ্রেডিক্টেবল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে যাবার আগে নাম উচ্চারণ না করে ঠিকই উত্তরসুরীকে শুভ কামনা জানিয়েছেন।