নিখোঁজ স্বামীকে ফিরে পেতে সম্ভব সকল চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গতকাল ২৮/০৪/২০২০ ইংরেজি মঙ্গলবার দুপুর ১২:৩০ ঘটিকার সময় বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন এক বৃদ্ধা। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ, অসহায় উদাস বিষন্ন চেহারা, দেখলে মায়া হয়। ইচ্ছে করে সর্বশক্তি দিয়ে তার স্বামীকে খুঁজে এনে যদি মানুষটির মুখে হাসি ফুটানো যেত। সামান্য সংবাদকর্মী হিসেবে আমাদের ক্ষমতা আসলেই কম। তার স্বামী একজন হত্যা মামলার পলাতক আসামি। যদিও পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। নিজেকে রক্ষা করতে কোথাও তিনি পালিয়ে আছেন বলেই তাদের ধারণা। উপজেলার নয়াগ্রাম গ্রামের মোছা: শাবানা ইয়াছমিনের স্বামী মো: শাহাব উদ্দিনকে গত মার্চ মাসের ৩০ তারিখ রোজ সোমবার কুমিল্লার উত্তর দুর্গাপুর শাবানা ইয়াছমিনের বোনের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে সাদা পোষাকধারী পুলিশ পরিচয় দেওয়া কিছু সদস্য। গ্রেফতার করলেও মোঃ শাহাব উদ্দিনকে কোন আদালতে বা জেলে প্রেরণ করা হয়নি বলে শাবানা ইয়াছমিনের অভিযোগ। কুমিল্লা ও সিলেটের প্রায় প্রত্যেক থানা, আদালত ও কারাগারে নিজের স্বামীর অবস্থান জানার চেষ্টা করেও কোন খোঁজ না মিলাতে অবশেষে বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবে এসে নিজের স্বামীর সন্ধান পেতে সহযোগিতা চাচ্ছেন তিনি। শাবানা ইয়াছমিনের কাঁন্নাজড়িত মিনতি, যে মিথ্যা মামলায় তার স্বামীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে সেই মিথ্যা মামলায় প্রয়োজনে তার স্বামীকে জেলে নেয়া হোক, বিচার করা হোক, কিন্তু মানুষটি এখন কোথায় কি অবস্থায় আছে তাকে জানতে দেয়া হোক। শাবানা ইয়াছমিন আরো বলেন, যে মিথ্যা মামলার প্রধান আসামি করে তার মেয়েকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে, যে মিথ্যা মামলায় তার স্বামীকে গ্রেফতার করে গুম করে দেয়া হয়েছে সেই হত্যা মামলার সাথে তাদের পরিবারের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। তার স্বামীর সম্পত্তি আত্মসাতের পরিকল্পনা থেকেই তাদের পুরো পরিবারকে এভাবে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে বলে তার অভিযোগ। ভয়ে কারো নাম উল্লেখ করতে না চাইলেও শাবানা ইয়াছমিন বলেন সম্পত্তি দখলের পরিকল্পনা থেকেই তার স্বামীর ঘনিষ্ট আত্মীয়দের দ্বারাই মিথ্যা মামলা অতঃপর গুমের মতো হৃদয়গ্রাহী গঠনার শিকার তার স্বামী। মোছাঃ শাবানা ইয়াছমিনের সংবাদ সম্মেলনের ভিত্তিতে তার স্বামীর গুমের বিষয়ে বিয়ানী বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াছিন আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন মোঃ শাহাব উদ্দিন এবং তার মেয়ে ২০১৮ সালের চাঞ্চল্যকর উর্মি বেগম হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। হতে পারে গ্রেফতার এড়াতে কিংবা পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে নিজে পালিয়ে থেকে এই গুম নাটক করছেন মোঃ শাহাব উদ্দিন। প্রশ্ন হচ্ছে কার বক্তব্য সঠিক? পুলিশ নাকি মোছাঃ শাবানা ইয়াছমিন? চোখের জলও কি মিথ্যা বলতে পারে? সকল অপরাধীই শাস্তির আওতায় আসবে তবে বিচারবহির্ভূত গুম কাম্য নয়, যথাযথ আইনের ব্যবহারের মাধ্যমে শাস্তি হোক মোঃ শাহাব উদ্দিনের যদি তিনি অপরাধী হন, তবে সত্যিকার অর্থে পুলিশ গ্রেফতার করে থাকলে মানুষটিকে আলোয় নিয়ে আসা হোক। জেলে হলেও মোছাঃ শাবানা ইয়াছমিনকে জানতে দেয়া হোক তার স্বামী জীবিত আছেন।