এসবিএন নিউজ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণে প্রস্তুত রয়েছেন সিলেট। শুধু আওয়ামীলীগ-ই নয়, তাকে বরণ করতে প্রস্তুতি নিয়েছেন সমগ্র সিলেটবাসী।
দীর্ঘ ৪ বছর পর দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম সিলেট আসছেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগমনকে ঘিরে গোটা নগরীকে সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে। প্রতিটি সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে শত শত তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে ভিআইপি রোড।
সিলেট নগরী যেন পরিণত হয়েছে অচেনা এক নগরে। নেই কোনো যানজট কিংবা কোলাহল। সবখানেই ছিমছাম, পরিপাটির এক শহর। এরই মধ্যে আজ সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সিলেটে প্রবেশ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর পরও গোটা দিনই তিনি সিলেটের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর আজকের আলীয়া মাদরাসা ময়দানের জনসভা সফল করতে টানা ১০ দিনের ঘাম ঝরানো প্রস্তুতি নিয়েছিল আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ-সংগঠনগুলো। সেই প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
গতকাল সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, শুধু আলীয়া মাদরাসা ময়দানই নয়, গোটা নগরী পরিণত হবে জনসমুদ্রে।
এবারের সিলেট সফর প্রধানমন্ত্রীর জন্য নতুন নয়। এর আগেও বহুবার সিলেট সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ব্যাপক প্রস্তুতির ফাঁকে এবারের সফরে এনেছে বৈচিত্র্যতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেই চলে যাবেন ওলিকুলে শিরোমণি হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহে। সেখানে মাজার জিয়ারতের পর তিনি হজরত শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন।
এরপর সিলেটের মদনমোহন কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন। দুপুরে সিলেট সার্কিট হাউসে কিছু সময় বিশ্রামের পর তিনি বিকালে সিলেটের আলীয়া মাদরাসা ময়দানে এসে জনসভায় ভাষণ দেবেন।
বিকালে তিনি সিলেট ত্যাগ করবেন। এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সসহ ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
একই সঙ্গে সিলেট আউটার স্টেডিয়াম ও ইলেকট্রনিকস সিটিসহ ১২টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সিলেটের আলীয়া মাদরাসা ময়দানে স্থাপিত নামফলক মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী এই ২২ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে গতকাল বিকালে শেষবারের মতো মাঠ পরিদর্শন করেছেন আওয়ামীলীগ নেতারা।
এ ছাড়া সমাবেশস্থলের আশপাশের এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরা করা হয়েছে। মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে অত্যাধুনিক মঞ্চ। এ মঞ্চ নির্মাণের তদারকি করছেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
জনসভার স্থল ও নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তা। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা ও এডিসি রহমত উল্লাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জনসভার স্থলসহ আশপাশের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে অর্ধশতাধিক সিসি ক্যামেরার বসানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার থেকে এ ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যার আগে ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ১ সপ্তাহ থেকে পুলিশ ও ১ মাস আগ থেকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ মাঠপর্যায়ে কাজ করছে।
এদিকে, গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে সংবাদ সম্মেলন করেছে আওয়ামীলীগ। দুপুরে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামীলীগ নেতারা বলেন, ‘বিগত ৭ বছর আওয়ামীলীগ সরকার সারা দেশের ন্যায় সিলেটে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। বর্তমানেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে।’
আলীয়া মাদরাসা মাঠের জনসভা সম্পর্কে আওয়ামীলীগ নেতারা বলেন, ‘ওই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন। তার বক্তব্য শুনতে সিলেটের ৪টি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সাধারণ মানুষ জনসভায় উপস্থিত হবেন। ওই জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাডভোকেট মো. শামছুল ইসলাম প্রমুখ।