নিজস্ব প্রতিবদেক :: দেশে এসে জান-মালের নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন দুবাই প্রবাসী ও দক্ষিণ সুরমার নাজির বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. সিরাজ আহমদ। শুধু তিনিই নন, তাঁর পরিবারের সদস্যরাও হুমকির মুখে। একটি দুস্কৃতকারী চক্রের অব্যাহত হুমকি এবং হয়রানিতে বিপাকে পড়েছেন সিরাজ, তাঁর পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্টজনরা।
এ মর্মে সিরাজ দক্ষিণ সুরমা থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) এবং পরবর্তীতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯ বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জিডি এবং অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের নাজিরবাজার এলাকার খোজনপুর (লাম্বাগাঁও) গ্রামের মবশ্বির আলীর ছেলে মো. সিরাজ আহমদ ৮ বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই)-এ প্রবাসী ছিলেন। গত ১৫ নভেম্বর তিনি দেশে আসেন।
দুবাইয়ে থাকা অবস্থায় নাজিরবাজার এলাকার ঝাজর গ্রামের মো রফিক মিয়ার ছেলে মো. কয়েছ আহমদের মাধ্যমে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানার বিওসি কেচরিগুল গ্রামের মৃত মরতুজা আলীর ছেলে মো. সুরুজ আলী ও তার সহযোগী ফেনি জেলার মো. নুরুন্নবি নুরের সঙ্গে পরিচয় হয়।
সেই সুবাধে সিরাজ আহমদ দেশে আসবেন শুনে তাকে ১২ নভেম্বরের একটি বিমানের টিকেট করে দেন মো. সুরুজ আলী। সেই সাথে সিরাজের সঙ্গে একটি বক্স দিয়ে বলেন, ‘এই বক্সে কসমেটিক্স পণ্য রয়েছে। এগুলো দেশে গিয়ে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার গাজীটেকা আইলাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে মো. সাইদুল ইসলামকে দিয়ে দিবে। এই পণ্যগুলো বৈধ, পথিমধ্যে কোনো অসুবিধা হবে না।’
এ কথা বলে সুরুজ আলী সেই বক্সের সঙ্গে প্রাপক সাইদুল ইসলামের ছবি এবং মোবাইল নাম্বার প্রবাসী সিরাজকে দেন। কিন্তু এ বক্সের মালামাল অবৈধ বলে ১২ নভেম্বর দুবাই এয়ারপোর্টে সিরাজকে আটকে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ। এসময় সুরুজ আলীকে বিষয়টি জানাতে সিরাজ তার ফোনে কল করলে সুরুজ কল রিসিভ করেননি। এ ঘটনার পর সিরাজকে দুবাই এয়ারপোর্টে ৭২ ঘণ্টা আটকে রাখে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে সেই মালামাল রেখে দিয়ে সিরাজকে ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
এদিকে, দেশের আসার পরপরই বড়লেখার মো. সাইদুল ইসলামসহ অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তি ০১৮১৯৮২৭৯৩৩, ০১৭৩০১০১৪৩১, ০১৭১২৯২৬৯০৫ এসব মোবাইল ফোন নাম্বার থেকে সিরাজের বোনের ফোন নাম্বারে (০১৭১২৩৯৭৯৯৮) কল দিয়ে সিরাজের প্রাণনাশের হুমকিসহ পরিবারের সবাইকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে।
সে দেশের ইমিগ্রেশনে মালামাল রেখে দেয়ার বিষয়টি সিরাজ তাদের বুঝিয়ে বললেও তাতে সাইদুল ও তাঁর সহযোগিরা কর্ণপাত না করে সিরাজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অবিরত হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়াও গত ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ডিবি পরিচয়ে কিছু লোক প্রবাসী সিরাজ আহমদের বাড়িতে ঢুকে ঘরের আছবাবপত্র তছনছ করে। ফলে সিরাজের বাড়ির মানুষসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়।
এমন পরিস্থিতিতে পড়ে সিরাজ গত ১৭ নভেম্বর নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জান-মালের নিরাপত্তা চেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি জিডি এন্ট্রি এবং পরবর্তীতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯ বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জিডি এবং লিখিত অভিযোগে সিরাজ আহমদ যে কোনো সময় তাঁর এবং পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি প্রশাসনের ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
জিডি’র বিষয়ে দক্সিণ সুরমা থানার এস.আই আব্দুর রহিম বলেন, সিরাজ জান-মালের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ বিষয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, জিডিতে উল্লেখ ৩টি মোবাইল ফোন নাম্বারের মধ্যে ২টি বন্ধ। আর একটিতে আমার কয়েক সেকেন্ড কথা হয়েছে। এর ব্যবহারকারী কুলাউড়ায় আছে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সে ব্যক্তি শনাক্তে আমরা কুলাউড়া থানায় লিখিতভাবে জানিয়েছি। অভিযুক্ত শনাক্ত হলেই আমরা তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।