ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখালেন রবি বোপারা। ব্যাট হাতে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেললেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। টানা চার ম্যাচ হারের পর বিপিএলে প্রথম জয় পেল সিলেট সুপার স্টার্স।
পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছে সিলেট। কুমিল্লার এটি পঞ্চম ম্যাচে দ্বিতীয় হার।
শেষ ওভারে টানা দুই বলে উইকেট নিয়ে ম্যাচ হঠাৎ জমিয়ে দিয়েছিলেন তরুণ বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি। কিন্তু হ্যাটট্রিক বলটি লং অফের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দলকে জিতিয়েছেন নাজমুল হোসেন।
বল হাতে ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন বোপারা, তবু ১৬৪ তুলে ফেলে কুমিল্লা। ব্যাটসম্যান বোপারাকেও তাই প্রয়োজন ছিল দলের। ইংলিশ ব্যাটসম্যানের কাছে এমন একটা ইনিংস পাওনা ছিল। বোলিংয়ে নিয়মিত ভালো করলেও আসল কাজ ব্যাটিংয়ে একদমই রান পাচ্ছিলেন না। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে পাওনাটা মিটিয়ে দিলেন বোপারা।
ষষ্ঠ ওভারে গিয়েছিলেন উইকেটে, আউট হয়েছেন শেষ ওভারে। ৩৮ বলে ৫০ রানের ইনিংসটা সিলেটকে নিয়ে গেছে জয়ের খুব কাছে।
বিপিএলে একই ম্যাচে অর্ধশতক ও ৪ উইকেট এই প্রথম।
মুশফিক রান পাচ্ছিলেন ঠিকই। কিন্তু জেতাতে পারছিলেন না দলকে। অবশেষে মেলবন্ধন হলো দুটির। ৩১ বলে ৪৭ রান করে যখন আউট হলেন, জয় তখন দৃষ্টিসীমায়।
২৬ বলে ৩৬ রান করে সিলেটের রানের গতি ধরে রেখেছিলেন ওপেনার দিলশান মুনাবিরা। তৃতীয় উইকেটে বোপারা-মুশফিকের ৫৭ বলে ৮৭ রানের জুটিতে জয়ের কাছাকাছি চলে যায় সিলেট।
এর আগে লিটন-ইমরুলকে নিয়ে অবশেষে প্রত্যাশিত শুরুটা পায় কুমিল্লা। শুরুতে ঝড় তুলেছেন লিটন। আর আগের কয়েক ম্যাচে বার বার তাড়াহুড়ো করে আউট হওয়া ইমরুল নিজের মত খেলেছেন সময় নিয়ে।
জ্বর কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে রানেও ফিরেছেন লিটন। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই অবশ্য স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান। এরপর উইকেটের দুই পাশেই খেলেছেন দৃষ্টিনন্দন কিছু শট। রুবেল হোসেনকে ডাউন দা উইকেটে উড়িয়েছেন লং অফের ওপর দিয়ে। তবে ফর্মে ফেরার ইনিংসটাকে বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারেননি। রবি বোপারার বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন ২৪ বলে ৪২ করে।
বোপারা নিজের পরের ওভারেই নিয়েছেন আরও ২ উইকেট। স্যামুয়েলস-নারাইনের বিদায়ে জরুরি বার্তায় উড়িয়ে আনা হয়েছিল মুখতার আহমেদকে। কিন্তু ১ রানেই বোপরাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন পাকিস্তানি এই ব্যাটসম্যান। লেংথ বল ক্রস ব্যাটে খেলে বোল্ড শুভাগত হোম (০)।
দারুণ শুরুর পর কুমিল্লা তখন হঠাৎই বিপাকে, রান ৩ উইকেটে ৬৬। সেখান থেকে দারুণ এক জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন ইমরুল ও জাইদি। ৪৮ বলে ৬২ রানের জুটি গড়েন দুজন। বোপারাকে চতুর্থ উইকেট উপহার দিয়ে ইমরুল ফেরেন ৪৮ রানে।
তবে শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে শেষ বলে দারুণ এক ছক্কায় দলের রান ১৬০ ছাড়িয়ে নিয়ে যান জাইদি। শহীদকে মারা ওই ছক্কায় অর্ধশতকও স্পর্শ করেন জাইদি; ৩৫ বলে করেন ৫৩ রান। ৭ বলে ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন মাশরাফি।
সিলেটের হয়ে উইকেট পেয়েছেন কেবল একজনই। ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন বোপারা। বাকি একটি রান আউট। চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে ৪ ওভারে ৪৮ রান গুণেছেন রুবেল।
পরে ব্যাট হাতেও দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বোপারা জেতালেন দলকে। ম্যাচ সেরা নির্বাচনে ভাবার প্রয়োজন হয়নি একটুও!