সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: বরিশাল নগরীর কাশিপুরে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সীমা আক্তারকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও হত্যা করে লাশ গুমের মামলায় আসামি আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালুকে ফাঁসিসহ যাবজ্জীবন ও ৭ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আসামির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দেড় লাখ টাকা ভিকটিমের পরিবারকে দেয়ার আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু শামীম আজাদ আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
শিশুটিকে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার দায়ে ফাঁসি ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অপহরণের দায়ে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং মরদেহ গুমের জন্য ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদনণ্ড দেয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্ত কালু নগরীর গনপাড়ার আব্দুল ওহাব খানের ছেলে। নিহত সিমা গনপাড়া এলাকার আব্দুল জব্বারের মেয়ে ও পূর্ব গনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর ফয়জুল হক ফয়েজ জানান, ২০১৮ সালের ১১ মার্চ সীমা বিদ্যালয়ের শৌচাগার বন্ধ থাকায় স্কুল সংলগ্ন কালুর বাড়ির শৌচাগারে যায়। এ সময় সীমাকে অপহরণ করে কালু নিজ ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে সিমাকে হত্যা শেষে লাশ বস্তাবন্দি করে গোরস্থানের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। ১৩ মার্চ ওই গোরস্থান থেকে সিমার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের মা মাহামুদা বেগম বাদী হয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওইদিনই কালুকে আটক করে। শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যার পর লাশ গুমের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কালু।
একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রহমান মুকুল একমাত্র কালুকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন। ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে শিশু সিমাকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এই রায় দেন।
বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোখলেচুর রহমান বাচ্চু বলেন, এ রায়ের পর আসামি উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন। ওই আপিলে তার ফাঁসির আদেশ বলবৎ থাকলে ফাঁসি কার্যকর করা হবে। আর ফাঁসিসহ অন্যান্য আদেশ পরিবর্তন হলে সেভাবে সাজাভোগ করতে হবে।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর