নওগাঁর সাপাহারে অবস্থিত শাওন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সইবুর রহমান বকুলের বিরুদ্ধে তার সাবেক ম্যানেজারের স্ত্রীকে জোরপুর্বক ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় যৌন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ধর্ষণ চেষ্টাকারীর বিরুদ্ধে সাপাহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এলাকাবাসী ও দায়েরকৃত মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার করমুডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ফায়জুল কবির প্রায় ৪ মাস আগে আসামির প্রতিষ্ঠান শাওন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ক্লিনিকের অদূরে জনৈক কিবরিয়ার বাসা ভাড়া নিয়ে ফায়জুল দম্পতি বসবাস করতেন। সেই সুবাদে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক প্রভাবশালী সইবুর রহমান বকুলের ওই বাসায় ছিল অবাধ যাতায়াত। ফায়জুল দম্পতি ক্লিনিক মালিককে চাচা হিসেবে সম্বোধন করতেন। এক পর্যায় ক্লিনিক মালিকের কুনজর পড়ে ফায়জুলের স্ত্রীর ওপর। বিভিন্ন সময় তাকে কুপ্রস্তাব দিতে শুরু করেন বকুল। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রভাবশালী বকুল তাকে হুমকি-ধামকি দিতে শুরু করেন। সর্বশেষ ঘটনার দিন গত ২৩ নভেম্বর রাতে ক্লিনিক মালিক বকুল তার সাবেক ম্যানেজারের বাড়ি যান। সেখানে শয়নঘরে প্রবেশ করে গৃহবধূকে একা পেয়ে তাকে ঝাপটে ধরেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা চালান। নিজেকে রক্ষার জন্য মেয়েটি চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকার শুনে আশপাশে থাকা স্বামী ফায়জুল ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ও লম্পটের হাত থেকে তার স্ত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এসময় উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তির শুরু হয়। ফায়জুলকে মারধরও করেন ক্লিনিক মালিক। এক পর্যায়ে বকুল ফায়জুলের মোবাইল ফোন হাতের কাছে পেয়ে ওটা নিয়েই চম্পট দেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বাজারে থাকা লোকজনের মাঝে জানাজানি হলে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ থানায় বকুলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এদিকে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় স্থানীয়ভাবে বিষয়টির মীমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত ৩০ নভেম্বর গৃহবধূ বাদী হয়ে ধর্ষণচেষ্টাকারী প্রভাবশালী সইবুর রহমান বকুলের বিরুদ্ধে এফআইআর নং-২২/২৫৩, ধারা-৩২৩/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০ সহ ৯(৪) (খ) ২০০০ সালের নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা থেকে বাঁচতে বকুল থানায় একটি কাউন্টার মামলা দায়ের করেছেন। এসব ঘটনার পর থেকে বকুল নিজের চিকিৎসার অজুহাত দেখিয়ে এলাকার বাইরে অবস্থান করছেন।
বকুলকে ফোন দেয়া হলে তিনি ওই ঘটনাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, পূর্ব পরকিল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে বলে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার জানিয়েছেন।