স্টাফ রিপোর্টার: পুলিশী নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিলে অপ্রয়োজনীয় সময়ক্ষেপণ না করতে রাষ্ট্রপক্ষকে তাগিদ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মুজিবর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামিমের ডিভিশন বেঞ্চে গতকাল রোববার রায়হান হত্যার বিষয়ে দায়ের করা রিটের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীর সময় আদালত রাষ্ট্রপক্ষের প্রতি এমন নির্দেশনা দেন। সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালত দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে রায়হান হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিলের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং চার্জশিট দাখিলে যাতে কোন সময়ক্ষেপণ না হয়-সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। শুনানীতে ব্যারিস্টার ফয়েজ বলেন,
রায়হান হত্যা মামলা একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। রায়হান হত্যাকান্ড নিয়ে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এবং প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে বিক্ষোভের বিষয়টি তিনি আদালতের নজরে আনেন।
রায়হান হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ১৩ অক্টোবর ব্যারিস্টার ফয়েজ হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। এ রিটের পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম গত ১ নভেম্বর একটি আবেদন দায়ের করেন। রিট পিটিশন এবং সালমা বেগম এর আবেদনটি আগামী ১৪ জানুয়ারী হাইকোর্ট এর কার্য তালিকায় থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার ফয়েজ।
উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। পরদিন রোববার সকালে তিনি মারা যান। ওইদিন রাতে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখের তত্বাবধানে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। তাকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগে ২১ অক্টোবর ফাঁড়ির আরেক এসআই হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এদিকে গত ১৩ অক্টোবর মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছে।