সিলেট-ঢাকা ৬ লেন এক্সপ্রেসওয়ে (মহাসড়ক) নির্মাণের ডিপিপি (ডেভেলপম্যান্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) চূড়ান্ত হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এটি চূড়ান্ত করে এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ১৬১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক ড. ওয়ালিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের পর প্রকল্পটি পাশ হবে। এর পরই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে। তিনি বলেন, আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে। ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা। সওজ সূত্র জানিয়েছে, গত ৯ নভেম্বর প্রকল্পের ডিপিপি চূড়ান্ত করে পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে পুরো প্রকল্পটি যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। কমিশনের অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেকে) পাঠানো হবে। একনেকে অনুমোদনের পর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হবে।
সওজ সূত্র জানায়, বৃহত্তর সিলেটবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পটির প্রায় পুরো অর্থ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকেও অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে।
সওজ সূত্র জানায়, প্রকল্পটি হবে আকর্ষণীয় এবং দৃষ্টিনন্দন। নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার পর্যন্ত ৬ লেনবিশিষ্ট ২০৯ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হবে। লালাবাজার থেকে হুমায়ূন রশিদ চত্বর পর্যন্ত বর্তমান সড়কই আরো মজবুত ও দৃষ্টিনন্দন করবে সওজ। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে প্রকল্পে সাহায্য হিসেবে আসবে ১৩ হাজার ৬১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ৩ হাজার ৫৫০ কোটি ২৯ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার।
মহাসড়কের দুই পাশে বৃক্ষরোপণ, ড্রেন নির্মাণ ও মধ্যখানে (ডিভাইডার), ফুলের গাছ রোপণের কথা রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশে থাকবে সার্ভিস লেন। পুরো এক্সপ্রেসওয়েতে ৮টি ফ্লাইওভার, ২২টি ওভারপাস, ৬৯টি ব্রিজ ও ১০টি আন্ডারপাস থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এক্সপ্রেসওয়েতে ৩টি ইন্টারচেঞ্জ ও ২৯টি ফুট ওভার ব্রিজও থাকবে। প্রকল্পের আওতায় উন্নত প্রযুক্তিসম্মত আধুনিক টোলপ্লাজাও নির্মিত হবে।
এক্সপ্রেসওয়ের মধ্যে হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সিলেট বিভাগের মধ্যে। বাকি ৮৯ কিলোমিটার ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলায়। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বৃহত্তর সিলেটবাসীর ঢাকায় যাতায়াত সহজতর হবার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটনশিল্প বিকাশের বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হবে।
প্রকল্প পরিচালক ড. ওয়ালিউর রহমান জানান, প্রকল্পের প্রায় পুরো টাকাই দেবে এডিবি। আমাদের মন্ত্রণালয়ের টাকাও থাকবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের পরই দরপত্রসহ পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।