সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:মহামারী থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, স্পেনসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলো সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবস পালন করতে পারে। সাবেক ছায়া চ্যান্সেলর জন ম্যাকডোনেলসহ ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিবিদের একাংশ ও ইউনিয়ন কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি জোট এই প্রস্তাব দিয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ এবং অন্যান্য নেতাদের কাছে জোটের পক্ষ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবস পালন করলে তা মহামারীর মধ্যে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় সহায়তা করবে।
এই জোটে আরও রয়েছেন, জার্মানির ডাই লিনক পার্টির চেয়ারম্যান কাটজা কিপিং, স্পেনের মেস প্যাস পার্টির সংসদ সদস্য ইগো এরেজন, ব্রিটেনের গ্রিন পার্টির এমপি ক্যারোলিন লুকাস এবং ইউনাইট ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লেন ম্যাকক্লাস্কি।
চিঠিতে চাকরী বাঁচানোর জন্য শ্রমিকদের দৈনিক কাজের সময় কমিয়ে আনার বিষয়ে নেয়া সিদ্ধান্ত ও তার দীর্ঘ পরিপ্রেক্ষিত তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি, জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বিদ্যুৎ খরচ কমাতে ও শ্রম ব্যবস্থা নতুন করে সাজানোর জন্য এই সুযোগ নেয়ার কথা পুনর্বিবেচনা করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘ইতিহাসজুড়ে দেখা গেছে, সংকট ও অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে বেকার এবং অতিরিক্ত কর্মচারীদেরকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রাখতে তাদের মধ্যে কাজকে সমানভাবে ভাগ করে দেয়ার উপায় হিসাবে স্বল্প কর্মঘণ্টা ব্যবহার করা হয়েছে। সভ্যতার উন্নতি ও সমাজের স্থিতিশীলতার শ্রমিকদের বেতন না কেটেই তাদের সবাইকে কর্মক্ষেত্রে রাখার এটাই সুযোগ।’
সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবস প্রতিষ্ঠিত করার এই প্রস্তাবগুলো নিয়ে আগ্রহ সাম্প্রতিক সময়ে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। অনেক ছোট কিন্তু বর্ধনশীল প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতি অনুসরনের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছে যে, এর শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ম্যাকডোনেল ছায়া চ্যান্সেলর থাকাকালীন লেবার পার্টি কর্মঘণ্টা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে কিছু ব্যবসায়ী গ্রুপ এবং আংশিক ডান-মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ এর কঠোর বিরোধিতার করেছে।
ব্রিটেনের বৃহত্তম ব্যবসায়িক লবি গ্রুপ, কনফেডারেশন অফ ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি ২০১৯ সালে যুক্তি দিয়েছিল যে, সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবস পালন ‘ভুল দিকে পদক্ষেপ’ হবে। কিছু ডান-মধ্যপন্থী অর্থনীতিবিদ বিশ্বাস করেন যে, কম কাজ করলে জীবনযাত্রার ক্ষতি হয়।
এই প্রস্তাবের পক্ষে প্রচারকারীরা তুলে ধরেছেন যে, ১৯৮০ এর দশক থেকে কর্মজীবিদের কাজের গড় সময় খুব একটা হ্রাস পায় নি। অথচ কম্পিউটারের মতো শ্রম-বাঁচানো প্রযুক্তির বিকাশ হওয়ার কারণে তাত্ত্বিকভাবে মানুষের অবসর কাটানোর জন্য আরও বেশি সময় পাওয়া উচিত ছিল। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।