আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নিজেদের অপরাধ অন্যের ওপর চাপানো বিএনপির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
রবিবার নাটোরে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মিলনায়তনে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ প্রতিনিধি সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রতিনিধি সম্মেলনে যুক্ত হন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনগণকে আগুনে পুডিয়ে বিএনপি জনগণের জন্য আন্দোলন করছে, এটা তাদের তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়। আগুন সন্ত্রাস ও অপকর্ম যারা করে তাদের পৃষ্ঠপোষকদের খুঁজে বের করা হবে। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের কুমতলব আবারও শুরু করেছে বিএনপি, এই কুমতলব থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২০১৪ সালের আগুন সন্ত্রাসের মতো আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বাসে অগ্নিসংযোগ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চলছে। এসব অপচেষ্টা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ কখনোই করবে না, সেটা মির্জা ফখরুল ইসলামদের বোঝা উচিত, মিথ্যাচার করা উচিত নয়। কোনো অপকর্ম করে কেউ ছাড় পাবে না। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সব অপকর্মের বিচার করা হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সব বিশৃঙ্খলার জবাব দেবে।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করুন, এরাই বিপদে পাশে থাকবে, আর সুবিধাভোগীদের হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সব কলহ থেকে বের হয়ে আসতে হলে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা ফিরে এসেছিলেন বলেই কলহ-কোন্দলে জর্জরিত আওয়ামী লীগকে এক সুতোয় ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে, তাই তো আওয়ামী লীগ আজ জনগণের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। করোনাকালেও অর্থনৈতিক চাকা সচল রয়েছে তাঁর বিজ্ঞ নেতৃত্বে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ধ্বংসস্তূপের উপরে দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা উড়িয়েছেন, গণতন্ত্রকে করেছেন শৃঙ্খলামুক্ত। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে জাতিকে তিনি বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্ত করেছেন। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তিনি দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উচিত প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে অবদান রাখা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাংগঠনিক ঐক্যের মাধ্যমে দলকে গণমুখী করতে হবে। দেশে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, পলাশীর ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের মহানায়ক আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ভূলুন্ঠিত করে নিষিদ্ধ করা হয় বঙ্গবন্ধু আর জয় বাংলা স্লোগানকে। ছিনতাই করা হয় বিজয়ের মুকুট। হাজার বছর ধরে লড়াই করা বাঙালি জাতির ধারাবাহিক পথ পরিক্রমায় ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ দেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আগমন ঘটে শেখ হাসিনার।
প্রতিনিধি সম্মেলনে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস সভাপতিত্ব করেন। সভার কার্যক্রম পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল।
এ ছাড়া সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আখতার জাহান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাব্লু সরকার, নাটোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খান, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভায় নাটোর জেলার উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।