লড়াই চলছে। লড়াইয়ে কে বিজয়ী হবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। এই বিজয়ই নির্ধারণ করবে, আগামী চার বছর বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকবেন কে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ২৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। অন্যদিকে, রিপাবলিকান প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৩টি ইলেক্টোরাল ভোট। বিজয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজন ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট।
বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন মোট ভোটের গড় বা জাতীয় ভোট নয়, বরং অঙ্গরাজ্যগুলোতেই প্রতিদ্বন্দি¦তার মধ্যে ভাগ্য গড়ে দেয় ভোটাররা। সেই প্রতিদ্বন্দি¦তা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এ রকম অন্তত ছয়টি অঙ্গরাজ্য রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্লোরিডা, ওহাইও এবং টেক্সাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি রাজ্য জিতেছেন। কিন্তু আরও চার বছর প্রেসিডেন্ট থাকতে হলে তাকে জিততে হবে আরও কিছু অঙ্গরাজ্য। অন্যদিকে, বাইডেনেরও আছে কিছু ভিন্ন উপায়। কিন্তু কোনটাই চূড়ান্ত নয়।
অ্যারিজোনা: ঐতিহ্যগতভাবে রিপাবলিকান, কিন্তু এবার এটিও ব্যাটলগ্রাউণ্ড। বাইডেন এগিয়ে আছেন এখন পর্যন্ত। কিছু গণমাধ্যম তাকেই সম্ভাব্য বিজয়ী বলছে।
জর্জিয়া: আরেকটি রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্য যেখানে এবার তুমুল লড়াই হচ্ছে। ট্রাম্প অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন তবে, কিছু এলাকার ভোট এখনো গণনা বাকি।
নেভাডা: বাইডেন এখানে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দি¦তার মুখে। অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন তিনি।
উইসকনসিন: গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটলগ্রাউণ্ড। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যটি ডেমোক্র্যাটদের হাতে থাকলেও ২০১৬ সালে হেরে গিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন। এবার এখনো অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন বাইডেন।
মিশিগান : হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। তবে, ডেমোক্র্যাট সমর্থিত বেশ কিছু এলাকার ব্যালট গণনা বাকি আছে।
পেনসিলভানিয়া: ২০টি ইলেক্টোরাল ভোট এখানে। বড় ব্যাটলগ্রাউণ্ড। ট্রাম্প এ মূহূর্তে এগিয়ে আছেন। কিন্তু পোস্টাল ভোট পড়েছে এখানে বিপুল সংখ্যায় যেগুলোর গণনা এখনো শুরু হযনি। রিপাবলিকানদের আইনি লড়াই শুরু হতে পারে এখান থেকেই।
গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় আর বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় যুক্তরাষ্ট্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় স্থানীয় সময় রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৮টায়)। ভোটের শুরুতেই কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এবার নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার আশঙ্কা যেমন আছে, তেমনি আছে জয়-পরাজয় নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনা।
পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজনাপূর্ণ যে, সহিংসতার আশঙ্কায় দেশজুড়ে অনেক দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে। জনমত জরিপ সত্য হলে বাইডেনের সহজেই জয়ী হওয়ার কথা, এমনকি তার নিরঙ্কুশ জয়ও অসম্ভব নয়।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রে ভোটের জটিল সমীকরণে আবারও ট্রাম্পকম্প হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা। তবে, গাণিতিক হিসাবে বাইডেনের জয়ের সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ আর ট্রাম্পের ১০ শতাংশ। অবশ্য এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, ২০১৬ সালের নির্বাচনে এমন এক পরিস্থিতির মধ্যেই জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার পরাজিত হলে তা হবে ১৯৯২ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশের পর প্রথম কোনো প্রেসিডেন্টের পুনঃনির্বাচনে হার।