স্কুলছাত্রী গণধর্ষণ মামলার আসামি রংপুরে মহানগর ডিবি পুলিশের এএসআই রাহেনুল ইসলাম ওরফে রাজুকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অধিকতর তদন্তের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইানভেস্টিগেশন)। আগামী ৪ নভেম্বর রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন পিবিআই’র পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন।
তিনি জানান, স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় এএসআই রাহেনুলের জড়িত থাকার বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। বিচারক আগামী ৪ নভেম্বর রিমান্ড আবেদনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন। তখন রিমান্ডে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
এর আগে আজ বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে রংপুর পিবিআই কার্যালয় থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রাহেনুলকে মাথায় হেলমেট পড়িয়ে আদালতে আনা হয়। পরে তাকে হারাগাছ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম অধিকতর তদন্তে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক স্নিগ্ধা রানি আগামী ৪ নভেম্বর রিমান্ড আবেদন শুনানির দিন ধার্য করেন। পরে তাকে মেট্রোপলিটন পুলিশের ভ্যানে করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। গত রবিবার থেকে পুলিশ হেফাজতে থাকলেও বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে রায়হানুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার এএসআই রায়হান ওই ছাত্রীকে হারাগাছ থানা এলাকায় ক্যাদারের পুল নামক স্থানে ডা. শহিদুল্লাহ মিয়ার ভাড়াটিয়া সুমাইয়া আক্তার মেঘলা ওরফে আলেয়াার বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে গত রবিবার ভাড়াটিয়া মেঘলা ওরফে আলেয়া ও তার সহযোগী সুরভি আক্তারের সহায়তায় লালমনিরহাট জেলার বাসিন্দা বাবুল হোসেন ও আবুল কালাম আজাদ মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ মেয়েটি ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় মেঘলাকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতে আরেক সহযোগী সুরভিকেও আটক করা হয়। আটক মেঘলা ও সুরভি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্দি না দেওয়ায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের জেল হাজাতে পাঠানো হয়।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ এনে এএসআই রাহেনুলসহ আরো দুইজনের নাম উল্লেখ করে নির্যাতিতা স্কুলছাত্রীর বাবা হারাগাছ থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলমের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয় নির্যাতনের শিকার ওই স্কুলছাত্রী। একই দিনে আরও দুইজন আসামি আবুল কালাম আজাদ ও বাবুল হোসেন ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। এই মামলায় এএসআই রাহেনুলসহ এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।