অতিথি প্রতিবেদক:: সিলেট নগরীর ওসমানী মেডিকেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে নানান ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। নিজেদের সনদে জাল জালিয়াতি থাকায় এখন অন্যদের এম, পি ও ভূক্ত আটকাতে মরিয়া হয়েছেন। এম,পি,ও ভূক্তির নামে শিক্ষকদের প্রায় দেড় লাখ টাকা আত্মসাতও করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতির নিকট ইতিমধ্যে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, বিদ্যালয়ে কর্মরত ৪২জন শিক্ষক-শিক্ষিকার স্বাক্ষরিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটি রেজুলেশনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে প্রধান শিক্ষক হিসেবে শাহীনা সুলতানাকে দ্বায়িত্ব দেন এবং এম, পি, ও ভূক্তির পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হয়। অথচ কতিপয় শিক্ষক-শিক্ষিকা স্বার্থহীনতার জন্যে বিদ্যালয়ের এম,পি, ও ভূক্তির ব্যাপারে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। নামে-বেনামে উড়ো চিঠির পাশাপাশি সভাপতি ও সদস্যদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের ও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসকল বিষয় উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষক শাহীনা সুলতানা বিদ্যালয় সভাপতির নিটক পৃথক অভিযোগ দেন। অভিযোগে এসকল বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়। এতে বিভাগীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক আইনগত ব্যবস্থা নিতে সভাপতির নিকট আবেদন করা হয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আফিয়া বেগম প্রধান শিক্ষক শাহিনা সুলতানাকে বিদ্যালয়ে যেতে অনুরোধ করেন। করোনাকালীন বিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও বিদ্যালয়ে যান প্রধান শিক্ষক। এসময় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের এম,পি,ও ভূক্তির খরচ বাবত অর্থ দিতে আফিয়া বেগমকে বললে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে তিনি প্রধান শিক্ষকের উপর লিপ্ত হয়ে অসদাচরণ করেন। এম,পি,ও ভূক্তির জন্যে শিক্ষক শামীমা বেগম কোন অর্থ দেননি। উল্টো এম,পি, ও ভূক্তি করে দেয়ার কথা বলে সহকারী শিক্ষক আব্দুল কাদিরসহ ৭ শিক্ষকের কাছ থেকে ১লাখ ৪০ হাজা টাকা বেগম শামীমা আহমদ আত্মসাত করেন। দিলোয়ারা বেগম, বেগম শামীমা আহমদ ও শাহীন হোসাইন প্রধান শিক্ষকের অগোচরে ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত স্টাফিং প্যাটার্ন পরির্বতন করে তাদের ইচ্ছেমতো রেজুলেশন প্রস্তুত করে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে মনগড়া স্টাফিং প্যাটার্ন ও সি,এস কপি স্ক্যানিং করে অনলাইনের মাধ্যমে এম,পি, ও ভূক্তির জন্যে আবেদন পাঠান। অভিযোগে বলা হয়েছে, এটি ফৌজধারী অপরাধ। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগে এসকল বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
এদিকে, সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পরও এম,পি, ও ভূক্তিতে নিজের ফাইল প্রেরণ না করে জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলায় নিয়োগপ্রাপ্ত দিলোয়ারা বেগমের ফাইল প্রেরণের বিষয়ে সৈয়দা নাঈমা খানম সিলেট সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দেন। এই অভিযোগের তদন্তে সম্পন্নের আগেই অনলাইনে আবেদন করা ৬জনের ফাইল জেলা শিক্ষক কর্মকর্তা ‘ব্যাক টু এপ্লিকেশন’ বলে ফেরত পাঠান। জেলা শিক্ষা অফিসের ভাষ্য অনুযায়ী অনলাইনে আবেদনকৃত ৬শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ৩শিক্ষক ও ১জন কর্মকর্তার দাখিলকৃত ফলাফল বিবরনীতে স্বাক্ষরিত ডিজি প্রতিনিধি আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বাক্ষর দেননি বলে জানান। এর জন্যেই ৪জনের ফাইল ফেরত পাঠানো হয়। সহকারী প্রধান শিক্ষক আফিয়া বেগমকে বি,এড সনদ না থাকা স্বত্তেও ম্যানেজিং কমিটি যেভাবে রেজুলেশনের মাধ্যমে দায়িত্ব দেন, ঠিক একই ভাবে বি,এড সনদপ্রাপ্ত শাহীনা সুলতানাকে একই নিয়মে রেজুলেশনের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেন।
অথচ সহকারী প্রধান শিক্ষক আফিয়া বেগম বি,এড সনদ ছাড়াই সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে অতিরিক্ত সম্মানী উত্তোলন করছেন যা সরকারী বিধি বহির্ভূত এবং ফেরতযোগ্য। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বিদ্যালয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকারী একটি চক্র রয়েছে। এসকল শিক্ষক ঐ চক্রের সাথে সম্পৃক্ত। তারা জাতির পিতার শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে বিদ্যালয়ে জাতির পিতার ব্যাপারে আপত্তিকর মন্তব্য ও অশালীন কথাবার্তা উচ্চারণ করেন।
এসকল বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বেগম শামীমা আহমদ ও শাহীন হোসাইনের সাথে মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তারা দু’জনেই কল রিসিভ করেন নি। অপর শিক্ষক দিলোয়ারা বেগমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সহকারী প্রধান শিক্ষক আফিয়া বেগমের স্বামী কল রিসিভ করে বলেন, তিনি( আফিয়া বেগম) বাসার বাইরে আছেন। তাই এখন কথা বলা যাবে না।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও এম, এ, জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা: মঈনুল হকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার সহকারী জানান তিনি এখন কথা বলতে পারবেন না। তিনি ল্যাবে কাজে রয়েছেন।