স্ত্রী রেণুকার মৃত্যুর একদিন পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন ‘নিকুঞ্জ স্যার’। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে নগরীর দাড়িয়াপাড়ার বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নিকুঞ্জ বিহারী দাস (৮২)। পরে দুপুরে নগরীর চালিবন্দর মহাশশ্মান ঘাটে প্রয়াতের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লায়। নিকুঞ্জ বিহারী দাস সিলেটের ব্লু-বার্ড স্কুলের গণিতের শিক্ষক ছিলেন। অনেক আগেই তিনি অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন শিক্ষকতার কারণে নিজের শিক্ষার্থী ছাড়াও সিলেটের অনেকের কাছেই তিনি ‘নিকুঞ্জ স্যার’ হিসেবেই পরিচিত। তার স্ত্রী রেণুকা চৌধুরীও স্কুল শিক্ষক ছিলেন।
নিকুঞ্জ-রেনুকা দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে ভারতে থাকেন। মেয়ে অদিতি দাস সংস্কৃতিকর্মী। তিনিও করোনায় আক্রান্ত। তবু বাবা-মায়ের চিকিৎসা থেকে সৎকার-সবকিছু সামাল দিতে হচ্ছে তাকে।
জানা গেছে, সিলেটের সংস্কৃতিকর্মী অদিতি দাস ঢাকায় একটি পত্রিকায় চাকুরি করতেন। ক্যান্সার আক্রান্ত বাবাকে শুশ্রƒষার জন্য চাকুরি ছেড়ে চলতি মাসের শুরুতে সিলেট চলে আসেন তিনি। এরপর গত ৬ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হন অদিতি দাসের মা রেণুকা চৌধুরী (৬৮)। পরে অদিতি নিজে এবং তার বাবারও করোনা ধরা পড়ে। এরপর গত সোমবার ভোরে নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নিকুঞ্জ দাসের স্ত্রী রেণুকা চৌধুরী। করোনা আক্রান্ত স্বামী-স্ত্রী দুজনেই এই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মায়ের মৃত্যুর পর বাবাকে নিয়ে দাড়িয়াপাড়ার বাসায় ফিরেন অদিতি। আর সোমবার বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের দিন মায়ের শেষকৃত্য করেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার আবারো বাবার লাশ নিয়ে চালিবন্দরের মহাশশ্মান ঘাটে ছুটতে হয়েছে মেয়ে অদিতিকে।
শোক : সংস্কৃতিকর্মী-সাংবাদিক অদিতি দাসের বাবা নিকুঞ্জ বিহারী দাস ও মা রেণুকা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট। নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু ও সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত এক শোকবার্তায় প্রয়াতদের আত্মার শান্তি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।