সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) এর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া রায়হানের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়া গেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, রায়হানকে ধরে ফাঁড়িতে এনে তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তার শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৪টি ছিল গুরুতর। তার দুটি আঙ্গুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। আর এমন নির্যাতন চালানো হয় তার মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে। এছাড়া, তার শরীরে চামড়ার নিচে প্রায় ২ লিটার রক্ত পাওয়া গেছে। রায়হানের লাশের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এসব তথ্য উল্লেøখ করা হয়েছে। পিবিআই, সিলেট-এর এসপি খালেদ উজ্জামান রিপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায়হানের ময়না তদন্তের প্রাথমিক (প্রিলিমিনারী) রিপোর্ট তারা গত শুক্রবার রাতে হাতে পান। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাশাপাশি রায়হানের ভিসেরাও সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্টের জন্য ভিসেরা পাঠানো হবে চট্টগ্রামে। ভিসেরা রিপোর্ট (মতামত) আসার পর ময়নাতদন্তের রিপোর্টও একসাথে কম্পাইল (সংযুক্ত) করা হবে। এরপর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে জানান এ পিবিআই কর্মকর্তা।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর রাত ৩টা ৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে স্বাভাবিক অবস্থায় রায়হানকে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে আনা হয়। পরে সকাল ৬টা ২৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে ফাঁড়ি থেকে বের করা হয়। ৬টা ৪০ মিনিটে ভর্তি করা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান।
ওই হাসপাতালেই বেলা ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। সেই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়, রায়হানের মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। সে হিসেবে ফাঁড়িতে আনার পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন চলে।
রিপোর্টে বলা হয়, রায়হানের ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল আর বাম হাতের অনামিকার নখ উপড়ানো ছিল । অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ কারণ ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেøখ করা হয়।