বুধবার দুপুরে অনলাইনে এক ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, গতবার যারা ফেল করেছে, তাদেরও জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।
গতবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করে নয় লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন। সেই হিসেবে গত বছর উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করেছিলেন তিন লাখ ৪৮ হাজার ৪৫৭ জন শিক্ষার্থী, যারা এবার আর কোনো পরীক্ষায় অংশ না দিলেও উচ্চ মাধ্যমিকের সনদ পাবেন।
এইচএসসিতে দুই বিষয়ে (সর্বোচ্চ চার পত্র) ফেল করলে পরের বছর শুধু ওইসব বিষয়ে পরীক্ষা দেয়া যায়। উচ্চ মাধ্যমিকে একজন শিক্ষার্থীকে সাতটি বিষয়ে ১৩টি পত্রে পরীক্ষায় বসতে হয়। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের গড় করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তারা এইচএসসির চূড়ান্ত মূল্যায়ন ঘোষণা করতে চান, যাতে জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
ডা. দীপু মনি বলেন, করোনাভাইরাস কবে যাবে সেটি আমরা কেউ জানি না। এ পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ নিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিতে ফেলতে চাই না।
তিনি আরো বলেন, সাড়ে ১৩ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা দেবে। আড়াই হাজারের বেশি পরীক্ষা কেন্দ্র প্রস্তুত ছিল, এখন তা দ্বিগুণ করা হবে। প্রশ্নপত্র করা হয়েছিল, তা খুলে আবার নতুন করে প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করতে হবে। তার ওপরে দ্বিগুণ প্রশাসনের জনবল নিয়োগ করার প্রয়োজন পড়বে। এত বিশাল আয়োজন এখন করা সম্ভব নয়।
মন্ত্রী বলেন, সব বিবেচনায় আমরা সরাসরি পরীক্ষা না নিয়ে বিকল্প উপায়ে মূল্যায়নের চিন্তা করছি। আমাদের হাতে দুটি পাবলিক পরীক্ষার ফল আছে তা দিয়েই মূল্যায়নের চিন্তা করছি। আর এ সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট অভিভাবক, শিক্ষা বিশেষজ্ঞসহ সকলের মতামত নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এইচএসসি এই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গিয়ে কোন জটিলতার শিকার হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সেটা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই ফল তাদের পূর্বতন পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের নিয়মে পরীক্ষা আয়োজন করবে। সেখানে কোনো বাধা আসবে না। এমনকি বাইরের দেশগুলোতে পড়তে গেলেও শিক্ষার্থীদের কোনো জটিলতায় পড়তে হবে না বলেও জানান দীপু মনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহাবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হকসহ সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গত ১ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। করোনার কারণে তা স্থগিত করা হয়।