সিলেট: স্বামীর কাছ থেকে নববধূ কেড়ে নিয়ে সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে গাড়িতে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তারেক আহমদ ও মাহফুজুর রহমান মাছুমকে আজ রোববার আবারও আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে।
পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে আজ রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে দিয়ে তাদেরকে আদালতেক হাজির করেন সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান (রহ.) থানা পুলিশ। পরে তাদেরকে সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারক জিয়াদুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। আজ সর্বশেষ এই দুই আসামির জবানবন্দি নিচ্ছেন আদালত।
এর আগে চাঞ্চল্যকর এ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার এই দুইদিনে ৬ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলাম এবং আজ শনিবার রনি, রাজন ও আইনুল আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে।
আদালত সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (২ অক্টোবর) বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্কর। আর রবিউল জবানবন্দি দেয় মুখ্য মহানগর হাকিম (দ্বিতীয়) সাইফুর রহমানের আদালতে।
পরদিন শনিবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১টায় শাহপরাণ থানাপুলিশ কড়া নিরাপত্তায় মামলার তিন নম্বর আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি এবং সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে অতিরিক্ত মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালতে হাজির করে। এই তিনজনের মধ্যে রাজন শনিবার বিকেল পর্যন্ত সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিকালে গণধর্ষণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেন রাজন।
অপরদিকে, শনিবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নীলার কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন অপর দুই আসামি রনি ও আইনুল। তারাও ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গত ২৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যারাতে স্বামীর কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে নববধূকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার ভোরে ছয়জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২/৩ জনকে অভিযুক্ত করে এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা (২১(৯)২০২০) দায়ের করেন ধর্ষিতার স্বামী।
মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হচ্ছে- সাইফুর রহমান (২৮), তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমদ (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম (২৫)।
এছাড়া ঘটনার পর অভিযানে নেমে সাইফুরের কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আলাদা আরেকটি মামলা দায়ের করেন শাহপরাণ (র.) থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন সরকার। ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমানকে আসামি করে মামলা (নম্বর-২২(৯)২০২০) দায়ের করেন তিনি।