ডেস্ক :: সিলেটের জলাবন (সোয়াম্প ফরেস্ট) রাতাগুলের ‘ওয়াচ টাওয়ার’ বর্তমানে নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। দর্শনার্থীদের ওঠানামায় হেলে যাচ্ছে উঁচু এই টাওয়ার। তবুও এক পলক পুরো জলাবনের দৃশ্য উপভোগ করতে ঝুঁকি নিয়ে টাওয়ারে উঠছেন বেড়াতে আসা লোকজন।
তবে প্রতিদিন শতশত পর্যটকদের ওঠানামায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেটের সুন্দরবন খ্যাত গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের জলাবন ‘রাতারগুল’ প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে অত্যন্ত পরিচত নাম। প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসেন রাতারগুলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
এজন্যে পুরো জলাবন এক পলকে দেখে নিতে সংরক্ষিত বন এলাকায় বন বিভাগের জাতীয় উদ্যান পরিকল্পনায় সুউচ্চ ‘ওয়াচ টাওয়ার’ নির্মাণ করা হয়। তখন পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর আপত্তির মুুখে কিছুদিন বন্ধ রাখা হলেও পরে শেষ করা হয় এর নির্মাণ কাজ। দর্শনার্থীদের উন্মুুক্ত করে দেওয়া হয় এটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্ষায় শতাধিক নৌকা নিয়ে রাতারগুল পরিদর্শনে আসেন দর্শনার্থীরা। বনে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে ওয়াচ টাওয়ার। তাই এক নজর পুরো বন দেখতে প্রথমেই টাওয়ারে ওঠেন সবাই। বর্তমানে এ টাওয়ারের অবস্থা খুবই নাজুক। এক সাথে শতাধিক দর্শনার্থীর ওঠানামায় নড়ে উঠে এই টাওয়ার। তবুও ঝুঁকি নিয়ে টাওয়ারে উঠে ছবি তোলা ও গল্পগুজবে মেতে ওঠেন পর্যটকরা।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিঁড়িতে মানুষের জটলা। ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াচ টাওয়ারে অনেকটা প্রতিযোগিতা করে উঠছেন সবাই। অবস্থা বুঝতে ওঠা হয় টাওয়ারের চূড়ায়। এসময় পর্যটকদের চাপে কাঁপছিল টাওয়ার। যে পাশে পর্যটক বেশি, সে পাশেই হেলে পড়ে টাওয়ার।
স্থানীয় পর্যটক গাইড মো. মন্তাজ আলী বলেন, এক সাথে পাঁচজনের অধিক উঠতে আমরা নিষেধ করি। নিষেধ সত্ত্বেও শতাধিক পর্যটক এক সাথে ওঠানামা করেন। উপরে উঠে যখন দেখেন এটি নড়ছে, তখন ভয়ে কেউ কেউ দ্রুত নিচে নেমে আসেন। টাওয়ারের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে যেকোনো সময় বিপদ হতে পারে।
টাওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ স্বীকার করে কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, এক পলকে পুরো জলাবন দেখার লোভ সামলানো দায়। তাই ঝুঁকি নিয়েই উঠছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিট কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকা বন প্রহরী আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ৪-৫ জনের বেশি না উঠতে সতর্কীকরণ সাইনর্বোড টানিয়ে অধিক পর্যটকের ওঠানামা ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে এটি এখন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।