প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসে বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন ভারতীয় এক নারী। বুধবার দুপুরে মঞ্জুরা বেগম নামের ওই ভারতীয় নারীকে আটক করে বিজিবি। বিজিবি তাকে বিনা পাসপোর্ট ও অনুমতি ছাড়া দেশে প্রবেশ করার কারণে দোয়ারাবাজার থানায় একটি মামলা দিয়ে বুধবার রাতে দোয়ারাবাজার থানায় হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে সুনামগঞ্জে আদালতে তোলা হয়। পরে আদালতের আদেশের জেল-হাজতে পাঠানো হয়। আটককৃত মঞ্জুরা বেগম ভারতের আসাম প্রদেশের কামরুক জেলার চাংসারি থানার টাপার পাথার গ্রামের মুগুর আলির মেয়ে।
সূত্র মতে, ৫ বছর আগে মামলার আসামি হয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতের আসামে গিয়েছিলেন আব্দুস সাত্তার (২৭) নামের সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার এক যুবক। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় মঞ্জুরা বেগম নামে এক তরুণীর।
তাদের মাঝে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। পরে সাত্তার দেশে ফিরে আসার পর মোবাইল ফোনে তাদের প্রেমের সম্পর্ক অব্যাহত থাকে। এভাবে দীর্ঘ পাঁচ বছর সম্পর্ক চলার পর প্রেমের টানে মঞ্জুরা বেগম ছুটে এসেছেন বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে। আসার পর প্রবাসে থাকা সাত্তারের সঙ্গে ফোনে বিয়ে হয় তার। কিন্তু অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে তাকে আটক করেছে বিজিবি।
স্থানীয়রা জানান, দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উত্তর কলাউড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুস সাত্তার পাঁচ বছর আগে তার এক বন্ধুর প্রেমে সহযোগিতা করায় মামলার আসামি হন। মামলায় তার বন্ধু জেল খাটেন আর তিনি পালিয়ে চলে যান। ভারতের আসামে প্রায় বছর খানেক বসবাস করায় মঞ্জুরা বেগমের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে। বছর খানেক পরে সাত্তার চলে আসেন বাংলাদেশে।
দেশে আসার পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বাহরাইন চলে যান। সেখানে তিনি প্রায় তিন বছর যাবৎ আছেন। এর মধ্যে দুজনের সম্পর্ক চলতে থাকে। সম্প্রতি মঞ্জুরার বিয়ের জন্য কয়েক জায়গা থেকে প্রস্তাব আসে।
এ বিষয়ে মঞ্জুরা সাত্তারকে জানান। সাত্তার মঞ্জুরাকে তার বাড়িতে বাংলাদেশে আসার ঠিকানা দেন। সেই অনুযায়ী গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশে চলে আসেন ওই ভারতীয় তরুণী। সাত্তারের ছোট ভাই ইমরান বর্ডার থেকে রিসিভ করে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে মঞ্জুরার সম্মতিতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাহরাইনে অবস্থানরত সাত্তারের সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আসার কারণে বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে বিজিবি আটক করে মঞ্জুরাকে। দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজির আলম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিজিবি একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা অনুযায়ী তাকে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বর্তমানে তিনি জেল-হাজতে রয়েছেন।