বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে পৌর এলাকার রাজনগর (দাসপাড়া) গ্রামের মুতলিব আলীর বাড়ির পার্শ্ববর্তী রাস্তায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে শফিক মিয়া (৩৮) নামের এক রিকশাচালককে খুন করা হয়েছে। সে মানিকগঞ্জের সিংরাই উপজেলার পাড়িলনওধা গ্রামের শাহজাহান মিয়ার পুত্র।
তবে রিকশাচালক শফিক মিয়া দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পৌর এলাকার রাজনগর রোডস্থ নিয়ামত আলীর কলোনীতে বসবাস করে আসছিল।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ রাত ১২টার দিকে মুতলিব আলীর বাড়ির পার্শ্ববর্তী রাস্তা থেকে গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় রিকশাচালক শফিক মিয়ার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং শনিবার সকালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
এদিকে শফিক মিয়া হত্যার ঘটনায় আজ শনিবার (২৯ আগস্ট) সকালে নিহতের ছোট ভাই রফিক আলী বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ২১ (তাং ২৯.০৮.২০ইং)। হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, এক বা একাধিক ব্যক্তি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রিকশাচালক শফিক মিয়াকে নির্জন রাস্তায় নিজ রিক্সার চাকার সঙ্গে রশি দিয়ে গলা বেঁধে রেখে যায়। নিহতের মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যায়নি।
এলাকাবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত শফিক মিয়ার পিতা শাহজাহান মিয়া দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে স্বপরিবারের বিশ্বনাথের শাহজিরগাঁও গ্রামের হাজী মোস্তফা মিয়ার বাড়ি বসবাস করে আসছেন। শফিক মিয়া বিয়ের কিছুদিন পর তিনি পিতা-মাতার কাছ থেকে পৃথক হয়ে যান এবং স্ত্রী, ১ পুত্র ও ১ কন্যা সস্তানে নিয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের রাজনগর রোডস্থ নিয়ামত আলীর কলোনীতে বসবাস করে আসছেন।
প্রায় ৬ বছর ধরে তিনি সেখানে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পৃথকভাবে বসবাস করে আসলেও তার পিতা-মাতার ও ভাই-বোন নিয়মিত বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। শফিক মিয়া পেশায় গাছ কাটা শ্রমিক ছিলেন। প্রায় মাস খানেক পূর্বে তিনি একটি রিকশা ক্রয় করে নিজেই তা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
প্রতিদিনের ন্যায় গত শুক্রবার সকালে রিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হন শফিক মিয়া এবং সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে চা পান করে আবারও রিকশা নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়েন। রাত ৮টা ৫০ মিনিটের সময় তিনি তার ছোটভাই লিটন মিয়ার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চান।
কিন্তু তখন লিটন বাড়ির বাহিরে থাকায় মায়ের সাথে কথা বলতে পারেননি। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই শফিক মিয়ার ফোনে কল দিলে ফোন বন্ধন পান লিটন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে শফিক মিয়ার লাশ রাস্তার উপর পড়ে থাকতে দেখে তার পরিবারকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। নিহত শফিক মিয়া একজন সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
নিহতের পরিবারের দাবি, রিকশাচালক শফিক মিয়াকে কেউ পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিছেন পরিবারের সদস্যরা।
এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার এসআই আফতাবউজ্জামান রিগ্যান বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে বুঝা যাচ্ছে এটি একটি হত্যাকান্ড। এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।