এসবিএন নিউজ রিপোর্টার সুজ্জল আহমদ, ওসমানীনগর প্রতিনিধি: মাছের মেলা! নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে বড় বড় মাছের কাল্পনিক সব সংগ্রহ। এ কল্পনাকে বাস্তবে নিয়ে আসে প্রতি বছরের শীতের শেষে অনুষ্ঠিত শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা।
কুশিয়ারা নদীর পাড়ে ঢুকতেই টের পাওয়া যায় বাতাসে তরতাজা মাছের ঘ্রাণ। চারপাশের ডালায় সাজানো অগণিত নানা জাতের মাছ শীতের মিঠেকড়া রোদে চকচক করছে। কুশিয়ারার তীরে হাজারো মানুষের ভিড়। এখানে শুধু মাছ কিনতে সবাই আসেনি। অনেকে এসেছে মাছ দেখতে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরের মাছের মেলার দৃশ্য এটি।
মৌলভীবাজারের শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর তীরে প্রায় দুইশত বছর পূর্ব থেকে চলে আসছে এ মেলা। এখনও তা চলছে। তবে মাছের মেলাটি এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়ে ৩ দিনে বর্ধিত হয়েছে। বাঙালির সংস্কৃতিতে বারো মাসে তেরো পার্বনের একটি পার্বন হলো পৌষ সংক্রান্তি। মূলত অগ্রহায়ণের ধান কাটার পর থেকে শুরু হয় নবান্ন উৎসব।
মৌলভীবাজার জেলা সদর থানার শেরপুর এলাকায় বসে মাছের মেলা। পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলার নবিগঞ্জ উপজেলা, উত্তরে কুশিয়ারা ও সিলেট জেলার বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর উপজেলা। মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী দেশের সবচেয়ে বৃহৎ মাছের মেলা এটি।
এ মেলা ১৩ জানুয়ারি বুধবার থেকে শুরু হবে এবং শেষ হবে ১৫ জানুয়ারি শুক্রবার। এবার মাছের মেলা দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করেন প্রশাসন। প্রায় ২০ লক্ষ টাকায় ইজারা পান শেরপুরের হামরকোনর মিজানুর রহমান মিজান।
এটি যদিও মাছের মেলা নামে পরিচিত তথাপি মাছ ছাড়াও বিভিন্ন পসরার কয়েক হাজার দোকান বসে কুশিয়ারার তীরজুড়ে। মেলায় মাছ ছাড়াও ফার্নিচার, গৃহস্থলী সামগ্রী, খেলনা সামগ্রী, নানা জাতের দেশীয় খাবারের দোকানসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যের দোকানও স্থান পায়। এছাড়া শিশুসহ সব শ্রেণীর মানুষকে মাতিয়ে তোলার জন্য রয়েছে বায়োস্কোপ ও চড়কি খেলা।
আগে এই মাছের মেলায় স্থানীয় বিভিন্ন হাওর-বাওরের, নদ-নদীর মাছ নিয়ে আসতো জেলেরা। এখন মৎস্য খামারগুলোর মাছতো আসেই। আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীদের বিরাট বিরাট চালান।
সিলেটের কুশিয়ারা নদী, সুরমা নদী, মনু নদী, হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুগুয়ার হাওর, কাওয়াদিঘি হাওর, হাইল হাওরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা রুই, কাতলা, বোয়াল, গজার, বাঘ, আইড় মাছসহ বিশাল আকৃতির মাছ নিয়ে আসেন এ মেলায়।