সিলেট অফিস: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অধীনে থাকা ‘সামাদ হাউজ, ফজল কমপ্লেক্স ও আমির কমপ্লেক্সসহ আরো কয়েকটি ছাত্রী হোস্টেলের ভাড়া পরিশোধের জন্য ছাত্রীদের নির্দেশ দিয়েছে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ।
এসব হোস্টেলে থাকা ছাত্রীদের চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে (এপ্রিল-আগস্ট) ৫ মাসের বাসা ভাড়া পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষ বার্তা পাঠিয়েছে মুঠোফোনে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এসব হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা গত মার্চের শেষের দিক থেকে বাড়িতে রয়েছেন। তাদের বড় একটা অংশ ‘টিউশনি’ করে পড়াশোনার খরচ চালান। বর্তমানে টিউশনি বন্ধ থাকায় একসাথে এত টাকা পরিশোধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন হোস্টেল শিক্ষার্থীরা।
হোস্টেল কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায়ের জন্য তৎপরতার বিষয়টি জানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও।
বিশ্ববিদ্যালয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বাসার মালিকদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনলাইনে মিটিং হয়েছে। তারা বাসা ভাড়া দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন আমাদেরকে।”
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। এর মধ্যে মাত্র দুই হাজার শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আবাসন ব্যবস্থা করতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ। বাকি ৮ হাজার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ভাড়া বাড়িতে কিংবা মেস ভাড়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় থাকতে হয়। যাদের অনেকেই ‘টিউশনি’ করে তার পড়ার খরচ চালান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফজল কমপ্লেক্সে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, হল সুপার গত কয়েকদিনে থেকে ফোন দিয়ে বলেছে এপ্রিল থেকে আগস্ট মাসের বাসা ভাড়া ২৫ তারিখে মধ্যে দিতে হবে। না হয় আমাদের বাসা ছেড়ে দিতে হবে। বাসার মালিক নাকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছে টাকার জন্য। এখন করোনা পরিস্থিতির মধ্যে একসাথে এত টাকা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ টাকা মওকুফ করা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করেছি অর্ধেক টাকা কমিয়ে আনতে।”
চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঁচ মাসের ভাড়া একসাথে নেয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যারা ২৫ তারিখের মধ্যে টাক পরিশোধ করতে পারবেনা, তাদের যে সমস্যা আছে তা উল্লেখ করে হল সুপার বরাবর আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবে।”
এ বিষয়ে ফজল কমপ্লেক্স, সামাদ হাউজ এবং আমির কমপ্লেক্স এর হল সুপারদের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউই ফোন ধরেন নি।
সিলেট শহরে বিভিন্ন স্থানে মেস-বাসায় থাকা শিক্ষার্থীরা ভাড়া কমানোর জন্য বেশ কিছুদিন থেকে আবেদন করে আসছিলেন প্রশাসন বরাবর। এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড: আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। যখন বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে তখন সিলেট সিটি কর্পোরেশান, মেস মালিক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একসাথে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”