জাহেদ আহমেদ (কিশোরগঞ্জ থেকে ফিরে):: আমি ও আমার বন্ধু জিকে জাহেদ জীবনানন্দের ‘এখানে আকাশ নীল’র সবটুকু নীল তখন আমাদের মাথার উপরে। সেই নীল সায়রে পেজোতুলোর মেঘের ওড়াওড়ি।
একই আকাশ তখন আমাদের পায়ের নিচেও; বিশাল হাওরজুড়ে যেন পুরো আকাশটারই প্রতিচ্ছবি। সে সময়, পৃথিবীর সমস্ত জঞ্জাল আর হিসেবের খেরোখাতা বন্ধ করে আমরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম হাওর আর আকাশের অনন্য মিতালী, চোঁখধাধানো সৌন্দর্য । এমন এক মুহুর্তে উপভোগ করতে আমরা দুই বন্ধু মিলে আড্ডায় মগ্ন ছিলাম।
উল্লেখ্য করা আবশ্যক যে, আমরা প্রকৃতির সাথে মিশতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবো করি কখনও এখানে কখনও বা তেপান্তরের শেষখানে আমাদের ছুটে চলার অধম্যতা যেন থামতেই চায় না।
এবার শুরু করি আমাদের গন্তব্যে শুরু কিভাবে, আমরা দুই বন্ধু হঠাৎ রাত ১১ টা দেশের অন্যতম জলরাশির অপরূপ শহর কিশোরগঞ্জ যাব ঠিক করলাম। দুইজন মিলে একাত্মতাপ্রকাশ করলাম। যাত্রা পথের বন্ধু হচ্ছে প্রিয় মটরবাইক। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে মহান রাব্বুল আলামীনের নাম নিয়ে রাত ১২ টার দিকে আমরা রশিদপুর থেকে রওনা দিলাম। যেহেতু সঙ্গি যখন মটর বাইক পথও এক লম্বা ব্যস্থতা তখন নাজির বাজার ওয়েল পাম্প থেকে বাইকের তেল নিলাম। (বি: দ্র: ২০০০ টাকার তেল নিলে কিশোরগঞ্জ থেকে গুরে আসা যাব)। তেল নেয়ার পর নাজির বাজার থেকে রওনা হওয়ার আগে একটু চা-পান করে শরীরটা চাঙ্গা করে যাত্রা শুরু করলাম। যেহেতু আমরা দুই বন্ধু হঠাৎ করে এই প্লান করছি। আমাদের ফোনে যতেষ্ঠ চার্জ না থাকার কারনে আমরা আউশকান্দি হাই রোডের পাশে এক বন্ধুর রেস্টুরেন্ট গিয়ে আমরা এক ঘন্টা ফোনে চার্জ দেই আর সামান্য নাস্তা করি। নাস্তা শেষে রাত প্রায় দুইটায় আবারও যাত্রা শুরু। প্রায় এক ঘন্টা ত্রিশ মিনিট গাড়ি চালানোর পরে আমরা ভৈরব গিয়ে পৌছালাম রাত ৪টায়। ভাবলাম একটু পরে ফজরের আযান হবে রাতও গভীর কিছু সময় বিশ্রাম নিলাম। আর এদিকে পেঠের ক্ষিদাই ছটপট করছি এবং আবারোও কিছু নাস্তা করি। নাস্তা শেষে আমাদের ভোর পাচঁটায় আমরা কিশোরগঞ্জ বিশ্বরোড দিয়ে দ্বাড়িয়াকান্দির গন্তব্যে উদ্দেশে রওনা হই এবং ত্রিশ বা চল্লিশ মিনিটের মাথায় আমরা ওই খানে পৌছাই। দ্বাড়িয়াকান্দি যাওয়ার পরে হাতের ডানের রাস্তা মানে অষ্টগ্রাম এর রাস্তায় ডুকে গেলাম। অগোছালো ভাবেই একটু হালকা চায়ে চুমুক দিলাম। ঐ রাস্তা দিয়ে আমরা বাজিত পুর এর উদ্দেশে রওনা হলাম। ওই খান থেকে আনুমানিক চল্লিশ বা পয়তাঁল্লিশ মিনিটে আমরা পৌছে গেলাম। এখন গাড়ি চালানুর পালা শেষ। চলে গেলাম আমরা খেয়া ঘাটে। গাড়ি দাড় করানোর সাথে সাথে কয় জন মাঝি আমাদের পাশে এসে বলল মামা অষ্টগ্রাম মিঠামইন যাবেন না কি আমরা বললাম হ্যা মামা যাব তো ভাড়া টা কত দিতে হবে কথাটা ক্লিয়ার করা ভাল। মামা বলল তিন হাজার টাকা। তার পর আমরা কথা বলে দুই হাজার টাকায় নৌকা ভাড়া করলাম যাওয়া আসার জন্য। আর মটর বাইক টা ও নৌকায় নিলাম। আর শক্ত করে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিলাম। মামা নৌকার ইঞ্জিন চালু করল আর দুই ঘন্টা পরে আমরা মিটামইন গিয়ে পোছালাম। আসলেই যারা আমাদের মত সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমিতে যেতে চান তাদের প্রতি আমাদের এই ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করলাম। অনেকক্ষন এপার-ওপার ঘুরার পর এবার বাড়ি ফেরার পালা। আবারো আমাদের ভ্রমণের প্রিয়সঙ্গি মোটরবাইক নিয়ে প্রাণের শহর জন্মভুমি সিলেটের উদেশ্যে যাত্রা শুরু করি। মহান আল্লাহ পাকের মহিমায় আমরা আমাদের প্রিয় শহর সিলেটের বিশ্বনাথে ফিরে আসি। আমরা মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি এবং পিতা মাতা ও সকলের দোয়া আমরা আমাদের নিজ বাড়ীতে ফিরে আসি। প্রিয় পাঠকগণ আবারো নতুন কোন প্রকৃতির ভালবাসার খোজে বের হবো। ইনশা আল্লাহ। আপনারা ভালো থাকেন, আমাদের জন্য দোয় করবেন।