বিশ্বনাথ (সিলেট): প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তিকারি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেলকে গ্রেফতার ও চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
৫আগষ্ট বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবে ইউনিয়নবাসির ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বড়খুরমা গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক মো: হানিফ আলী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান রুহেলের অন্যায়-অত্যাচার, ঘুষ, দূর্নীতি, চাঁদাবাজি, প্রতারনা, জালিয়াতি, উপজেলা পরিষদ পুড়ানো, সরকার ও রাষ্ট্রবিরুধি কর্মকান্ডে সকলেই অতিষ্ট। একটি খুনের মামলা ও একটি জালিয়াতি মামলার চার্জশীটভুক্ত পলাতক আসামি রুহেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে বলা হয়, চেয়ারম্যান রুহেল মনোকোপা গ্রামের হাজী মখলিছ আলী খুন ও বড়খুরমা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী হারুন মিয়া উরফে ইরন মিয়ার স্বাক্ষর জাল করে পন্নাউল্লা বাজারের ২২নং দোকান ঘরটি দখলে চার্জশীট ভুক্ত মামলার পলাতক আসামি। এ মামলার চার্জশীট দাখিলের পর চেয়ারম্যান রুহেল আরেকটি জাল দলিল তৈরী করে এই দোকানটি অন্যজনের কাছে বিক্রি করে দেন। এ ঘটনায় গত ৭জুলাই বিশ্বনাথ থানায় আওয়ামীলীগ নেতা রুকন মিয়াজী বাদি হয়ে একটি এজহার দাখিল করলে অদ্য তারিখ পর্যন্ত থানা পুলিশ সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, টেংরা গ্রামের চাঞ্চল্যকর আজির হত্যা মামলাটি আপোষে নিষ্পত্তির কথা বলে আসামীদের নিকট থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পিঠাকরা গ্রামের অধ্যক্ষ মাওলানা ইলিয়াছ হুমাইদি ও তার পরিবারটিকে চেয়ারম্যান তার লোকজন হামলা মামলা দিয়ে বাড়ি ঘর থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। রড়খুরমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, গ্রাম পুলিশ, দফাদার ও ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাকে মারপিট ও লাঞ্চিত অপমানিত করেছেন। চেয়ারম্যান রুহেল নিজের ড্রয়ার থেকে টাকা সরিয়ে গ্রাম পুলিশ আব্দুল মতিনকে আসামি করে মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। আদালতে এ মামলা মিথ্যা প্রমানিত হলে আলমনগর গ্রামের আরো একজন মানুষিক রোগীকে আসামি করে পূণরায় মামলা দায়ের করেন। বিভিন্ন সময় সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী নাশকতা মূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে আরও ৮টি মামলার তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত গ্রাম পুলিশ আব্দুল মতিন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম সম্পূন্ন পরিকল্পিত ভাবে টাকা চুরির মামলা দিয়ে রিমান্ডে এনে আমাকে হয়রানি করেছেন। আদালতে আমি খালাস পেলেও আলমনগর গ্রামের ফজর আলী উরফে জরিফ আলীকে পূণরায় আসামি করে হয়রানি করেন।
উত্তর বড় খুরমা গ্রামের ৯০ বছর বয়সি আব্দুল জব্বার বলেন, সরকারি ঘর দেয়ায় কথা বলে চেয়ারম্যান রুহেল পনাউল্লা বাজারের হারুন মিয়ার দোকান ঘরের জাল দলিলে আমার স্বাক্ষর নিয়েছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতা বড়খুরমা গ্রামের নিবাসী আহমদ আলী সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, করোনাকালিন সময়ে আমি ত্রাণ আনতে গেলে চেয়ারম্যান রুহেল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চরমভাবে কটুক্তি করেন। আমি এ ঘটনা জেলা উপজেলা আওয়ামীলীগকে জানিয়েছি। কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই। ইউনিয়ন পরিষদ আইন মোতাবেক চেয়ারম্যানকে বহিস্কার ও গ্রেফতারের জন্য আইন সৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য আলতাব আলী, আব্দুল মন্নান, শাকিল আহমদ, বাবুল মিয়া, দিলশাদ মিয়া, মখদ্দুছ মুনশি, শিব্বির আহমদ, মছব্বির আহমদ, হেয়ান মিয়া, খছরু মিয়া প্রমুখ।